এখানে (chapter 8) উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত : বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব, WBBSE ক্লাস 10 ইতিহাস (History) (Bengali medium) আধুনিক ভারতের ইতিহাস ও পরিবেশ (Adhunik Bharater Itihas O Poribesh)-এর উত্তর, ব্যাখ্যা, সমাধান, নোট, অতিরিক্ত তথ্য, এমসিকিউ এবং পিডিএফ পাওয়া যাবে। নোটগুলো শুধুমাত্র রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন এবং প্রয়োজনমতো পরিবর্তন করতে ভুলবেন না।
Select medium |
English medium notes |
Bengali medium notes |
সারাংশ (summary)
ভারত ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু এই স্বাধীনতার সাথে সাথেই অনেক বড়ো সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ের কথা, উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত : বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (১৯৪৭-১৯৬৪) (Uttar-Ouponibeshik Bharat: Bish Shataker Dwitiya Parba (1947-1964)) অংশে আলোচনা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড়ো সমস্যা ছিল দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের সাথে যুক্ত করা। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার সময় প্রায় ৬০০টি ছোটবড়ো রাজ্যকে স্বাধীনতা দিয়েছিল – তারা ভারত বা পাকিস্তানে যোগ দিতে পারত, অথবা নিজেরা স্বাধীন থাকতে পারত।
ভারত সরকার চাইল সব রাজ্য ভারতের সাথে যোগ দিক। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এই কাজের দায়িত্ব নিলেন। তিনি বেশিরভাগ রাজাকে বুঝিয়ে বা কিছুটা চাপ দিয়ে ভারতে যোগ দিতে রাজি করালেন। কিন্তু তিনটি রাজ্য – জুনাগড়, হায়দ্রাবাদ আর কাশ্মীর – প্রথমে রাজি হয়নি। জুনাগড়ে গণভোটের মাধ্যমে এবং হায়দ্রাবাদে পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে পরে ভারতের সাথে যুক্ত করা হয়। কাশ্মীর নিয়ে সমস্যাটা জটিল ছিল। সেখানকার রাজা ভারতে যোগ দিলেও পাকিস্তান তা মানেনি এবং সেখানে হানাদারি চালায়, যা আজও একটা সমস্যার কারণ হয়ে আছে।
দেশভাগের ফলে আর একটি বিরাট সমস্যা তৈরি হয়েছিল – উদ্বাস্তু সমস্যা। দাঙ্গার কারণে লক্ষ লক্ষ হিন্দু আর শিখ পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়, আর অনেক মুসলমান ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যান। এই মানুষগুলো তাদের ঘরবাড়ি, সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিল। তাদের আশ্রয় দেওয়া, খাবার দেওয়া আর নতুন করে জীবন শুরু করতে সাহায্য করা ভারত সরকারের জন্য খুব কঠিন কাজ ছিল। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম আর ত্রিপুরাতে পূর্ব পাকিস্তান (এখন বাংলাদেশ) থেকে অনেক উদ্বাস্তু এসেছিলেন, যাদের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল। সরকার তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তি নামে একটি চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য, কিন্তু তাতেও সমস্যার পুরো সমাধান হয়নি। দেশভাগের যন্ত্রণা মানুষের মনে গভীর দাগ কেটেছিল, যা তাদের জীবনকে বিষের মতো প্রভাবিত করেছিল (“বিষের মতোই ক্রিয়া করেছে” – এর মানে হল এটা খুব খারাপ প্রভাব ফেলেছিল)।
স্বাধীনতার পর ভারতে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি ওঠে। প্রথমে সরকার রাজি ছিল না, কারণ তাদের ভয় ছিল এতে দেশের একতা নষ্ট হতে পারে। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগুভাষী মানুষেরা আন্দোলন শুরু করেন এবং শ্রীরামালু নামে একজন অনশন করে মারা যান। এরপর সরকার ১৯৫৩ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ গঠন করে। পরে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন তৈরি হয় এবং ১৯৫৬ সালে ভাষার ভিত্তিতে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়। এর পরেও বোম্বাই রাজ্যকে ভেঙে ১৯৬০ সালে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট তৈরি করা হয়।
পাঠ্য প্রশ্ন ও উত্তর (Prantik textbook)
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
(ক) ভারতীয় স্বাধীনতা আইন-এ দেশীয় রাজ্যগুলিকে-
(i) ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়
(ii) সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করা হয়
(iii) পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়
(iv) স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
উত্তর: (ii) সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করা হয়
(খ) দেশীয় রাজ্যগুলির মধ্যে যে রাজ্যটি সবার শেষে ভারতভুক্ত হয়েছিল সেটি হল-
(i) জুনাগড়
(ii) হায়দরাবাদ
(iii) কাশ্মীর
(iv) ত্রিপুরা
উত্তর: (ii) হায়দরাবাদ
(গ) নেহরু ও লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়-
(i) ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে
(ii) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে
(iii) ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে
(iv) ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (ii) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) মাদ্রাজ প্রদেশের তেলেগু ভাষীদের নিয়ে যে রাজ্যটি তৈরি হয়েছিল সেটি হল-
(i) অন্ধ্রপ্রদেশ
(ii) কেরালা
(iii) মহীশূর
(iv) মহারাষ্ট্র
উত্তর: (i) অন্ধ্রপ্রদেশ
কোনটি ঠিক কোনটি ভুল লেখো
(ক) নেহরু সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়েছিল।
উত্তর: ভুল
(খ) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বন্ধ করার ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
উত্তর: ঠিক
(গ) উদ্বাস্তু প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে রচিত ‘দ্যা মার্জিনাল মেন’ গ্রন্থের রচয়িতা হলেন হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর: ভুল
(ঘ) ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠিত হয়।
উত্তর: ভুল
নীচের বিবৃতির সঙ্গে সবচেয়ে মানানসই ব্যাখ্যাটি বেছে নাও
(ক) স্বাধীন ভারতবর্ষে জাতীয় ঐক্য কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল—
ব্যাখ্যা
(i) দেশভাগের ফলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা হয়েছিল।
(ii) দেশীয় রাজ্যগুলি স্বাধীনতা ঘোষণা করে স্বতন্ত্র থাকতে চেয়েছিল।
(iii) ভারতবর্ষের জাতিগত, ভাষাগত বৈচিত্র্য নানা সমস্যা তৈরি করেছিল।
উত্তর: ব্যাখ্যা (ii) দেশীয় রাজ্যগুলি স্বাধীনতা ঘোষণা করে স্বতন্ত্র থাকতে চেয়েছিল।
(খ) পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুরা মূলত পশ্চিমবঙ্গে, এবং কিছু পরিমাণে আসাম ও ত্রিপুরায় এসে আশ্রয় নিয়েছিল।—
ব্যাখ্যা
(i) অন্যান্য রাজ্যে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি।
(ii) এই তিনটি রাজ্য পূর্ব পাকিস্তানের নিকটবর্তী ছিল।
(iii) ভাষাগত ঐক্যের কারণে তারা এই তিনটি রাজ্যে আশ্রয় নেয়।
উত্তর: ব্যাখ্যা (iii) ভাষাগত ঐক্যের কারণে তারা এই তিনটি রাজ্যে আশ্রয় নেয়।
(গ) দক্ষিণ ভারতের মানুষদের মধ্যে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবি ছিল সবচেয়ে বেশি—
ব্যাখ্যা
(i) তারা নিজেদের মাতৃভাষাকে খুব ভালোবাসত।
(ii) দক্ষিণ ভারতের এক মাদ্রাজ প্রদেশের মধ্যেই চারটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ ছিল।
(iii) তারা মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষা জানত না।
উত্তর: ব্যাখ্যা (ii) দক্ষিণ ভারতের এক মাদ্রাজ প্রদেশের মধ্যেই চারটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ ছিল।
মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করো
(ক) আসাম
(খ) জুনাগড়
(গ) দেশীয় রাজ্য হায়দরাবাদ
(ঘ) পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বসতিস্থান বনগাঁ।
(ঙ) পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ভারতে আসাউদ্বাস্তুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বসতিস্থান অমৃতসর।
বামস্তম্ভের সঙ্গে ডানস্তম্ভ মেলাও
বামস্তম্ভ | ডানস্তম্ভ |
(i) দয়াময়ীর কথা | (a) হায়দরাবাদ |
(ii) দেশভাগের স্মৃতি | (b) অন্ধ্রপ্রদেশ |
(iii) নিজাম | (c) অধীর বিশ্বাস |
(iv) তেলেগু ভাষা | (d) সুনন্দা সিকদার |
উত্তর:
বামস্তম্ভ | ডানস্তম্ভ |
(i) দয়াময়ীর কথা | (d) সুনন্দা সিকদার |
(ii) দেশভাগের স্মৃতি | (c) অধীর বিশ্বাস |
(iii) নিজাম | (a) হায়দরাবাদ |
(iv) তেলেগু ভাষা | (b) অন্ধ্রপ্রদেশ |
একটি বাক্যে উত্তর দাও
ক. দেশীয় রাজ্যগুলির জন্য গঠিত মন্ত্রকে সচিব পদে কে নিযুক্ত হয়েছিলেন?
উত্তর: ভি. পি. মেননকে দেশীয় রাজ্যগুলির জন্য গঠিত মন্ত্রকের সচিব নিযুক্ত করা হয়।
খ. কার নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতভুক্তির চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিল?
উত্তর: সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতভুক্তির চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছিল।
গ. বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের কোন্ জেলা দেশীয় রাজ্য ছিল?
উত্তর: বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলা দেশীয় রাজ্য ছিল।
ঘ. কোন্ সময়কে ‘পুনর্বাসনের যুগ’ বলা হয়?
উত্তর: স্বাধীনতা লাভের পর প্রথম পাঁচবছরকে ‘পুনর্বাসনের যুগ’ বলা হয়।
ঙ. ‘উদ্বাস্তু’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
উত্তর: ‘উদ্বাস্তু’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়।
চ. কত খ্রিস্টাব্দে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের জন্ম হয়?
উত্তর: ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের জন্ম হয়।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন
ক. স্বাধীন ভারতের সামনে কী কী সমস্যা তৈরি হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু এই স্বাধীনতার আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। স্বাধীন ভারতবর্ষের সামনে তৈরি হয় অজস্র সমস্যা। দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতে যোগদানের অনীহা, ভারতভাগের সঙ্গী হয়ে আসা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, উদ্বাস্তু সমস্যা, জাতিগত-ভাষাগত অনৈক্য-এমন নানা সমস্যায় জীর্ণ ভারতের অস্তিত্ব ও সংহতি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। অসংখ্য দেশীয় রাজ্যের ভারতভুক্তির বিষয়টি সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত ভারতের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসাবে দেখা দেয়।
খ. দেশীয় রাজ্যগুলি প্রথমে স্বাধীন ভারতে অন্তর্ভুক্ত হতে চায়নি কেন?
উত্তর: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই জুলাই-এর ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’-এ দেশীয় রাজ্যগুলিকে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করা হয়। বলা হয় দেশীয় রাজ্যগুলি ইচ্ছা করলে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। অথবা তারা স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে। এই ঘোষণার পর দেশীয় রাজাদের অনেকেই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। জিন্নাহ দেশীয় রাজাদের মদত দিয়ে বলেন যে তাঁরা ইচ্ছা করলেই স্বাধীন থাকতে পারেন। এছাড়াও, দেশীয় রাজা ও তাদের দেওয়ানরা প্রাক্-ব্রিটিশযুগের স্বৈরাচারী শাসন ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
গ. ভারতভুক্তির শর্ত সম্বলিত চুক্তিপত্রে (Instrument of Accession) কী ঘোষণা করা হয়েছিল?
উত্তর: ভারতভুক্তির শর্ত সম্বলিত চুক্তি পত্রে (Instrument of Accession) দেশীয় রাজা মহারাজাদের খেতাব ও উপাধি বজায় রাখা হয়। তাদের বিশাল পরিমাণ রাজন্য ভাতা প্রদান করা হবে বলেও ঘোষণা করা হয়।
ঘ. সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সম্পর্কে গান্ধিজি কী মনোভাব পোষণ করেছিলেন?
উত্তর: দেশভাগের পর যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল তাতে গান্ধিজি গভীরভাবে ব্যথিত হয়েছিলেন। তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিবাদে অনশন করেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে জন্মদিনের এক শুভেচ্ছা বাণীর উত্তরে গান্ধিজি বলেন-‘বর্বর হয়ে ওঠা মানুষের সে নিজেকে হিন্দু, মুসলিম বা যা খুশি বলুক-এই কষাইগিরির অসহায় সাক্ষী হয়ে থাকার পরিবর্তে সর্বশক্তিমানের কাছে এই প্রার্থনাই করি তিনি যেন এই ‘অশ্রুপ্লাবিত ভূমি’ থেকে আমাকে সরিয়ে নিয়ে যান।”
ঙ. ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের জন্য কী দাবি করেছিলেন?
উত্তর: ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের জন্য দাবি করেন-হয় বাংলা বিভাগ বাতিল করতে হবে, নয় পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের কিছু জমি ছেড়ে দিতে হবে।
চ. স্বাধীনতা লাভের প্রথম দিকে কংগ্রেস সরকার ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনের দাবি মেনে নেয়নি কেন?
উত্তর: ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিচারপতি এস. কে. ডর -এর নেতৃত্বে গঠিত কমিশন ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠনের বিরোধিতা করে। কমিশনের বক্তব্য ছিল ভাষাভিত্তিক রাজ্য বিভাজনে প্রাদেশিক জটিলতা দেখা দেবে এবং জাতীয় ঐক্য বিঘ্নিত হবে। পরে ১৯৪৮-এর শেষে নেহরু, বল্লভভাই প্যাটেল ও কংগ্রেস সভাপতি পট্টভি সীতারামাইয়াকে নিয়ে গঠিত কমিটিও ঐক্য, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের বিপক্ষেই রিপোর্ট দেন।
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন
ক. ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’-এ দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে কী বলা হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই জুলাই-এর ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’-এ দেশীয় রাজ্যগুলিকে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করা হয়। বলা হয় দেশীয় রাজ্যগুলি ইচ্ছা করলে ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। অথবা তারা স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে। কিন্তু ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ঘোষণার সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলী এও জানিয়েছিলেন যে ব্রিটিশ সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেবে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও স্বীকৃতির দাবি সমর্থন করবে না। ব্রিটিশ সরকার আশা পোষণ করেন যে-‘সব কটি রাজ্যই যথাকালে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের অন্তর্গত কোনও না কোনও ডোমিনিয়নে তাদের যথাযোগ্য স্থান খুঁজে নেবে।’
খ. দেশীয় রাজ্যগুলিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে কী কী পদ্ধতি গৃহীত হয়েছিল?
উত্তর: ভারতের সঙ্গে দেশীয় রাজ্যগুলিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে সরকার তিনটি নীতি গ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় সরকার শাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে দেশীয় রাজ্যগুলিকে যুক্ত করা, বা কাছাকাছি প্রদেশগুলির সঙ্গে তাদের যুক্ত করা, যেমন-উড়িষ্যা ও মধ্যপ্রদেশের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সংযুক্তি, উত্তর-প্রদেশের সঙ্গে গাড়োয়াল, রামপুর ও বেনারসের সংযুক্তি, বোম্বাইয়ের সঙ্গে দাক্ষিণাত্য ও গুজরাটের রাজ্যগুলির সংযুক্তি, কুচবিহার রাজ্যের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংযুক্তি ইত্যাদি। কয়েকটি রাজ্যকে একত্রিত করে একটি বৃহৎ যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা। যেমন—রাজস্থানের যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি। এছাড়া হিমাচলপ্রদেশ, কচ্ছ, বিলাসপুর, ভূপাল, ত্রিপুরা ও মণিপুরকে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নিয়ে আসা হয়।
গ. ‘এক অল্প সময়ে এতো বড়ো মানবগোষ্ঠীর গৃহত্যাগের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে পাওয়া যায় না’-দেশভাগের প্রসঙ্গে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
উত্তর: দেশভাগের পর যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল এবং তার ফলে যে উদ্বাস্তু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, সেই পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্যটি যথার্থ। দেশভাগ-এর সঙ্গে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা হয় তা থেকে জন্ম নেয় ‘উদ্বাস্তু সমস্যা’। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের অত্যাচারে বহু হিন্দু, শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে ভারতে চলে আসতে থাকে। একইভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব পাঞ্জাব থেকেও বহু মুসলমান সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের অত্যাচারে পাকিস্তানে চলে যেতে বাধ্য হয়। এই অল্প সময়ে এত বড়ো মানবগোষ্ঠীর গৃহত্যাগের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে পাওয়া যায় না। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের শেষে পাকিস্তান থেকেও প্রায় ৬০ লক্ষ উদ্বাস্তু ভারতে আসে। ভারত সরকারকে এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। এদের পুনর্বাসন ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা ছিল নেহরু সরকারের এক বড় চ্যালেঞ্জ। দেশ ভাগের পর ট্রেন বোঝাই ছিন্নমূল উদ্বাস্তু মানুষ ভারতে আসে। পথে পথে, অনাহারে এবং বিনা চিকিৎসায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সম্ভব হয় কারণ তারা পাকিস্তানে চলে যাওয়া মানুষদের জমি, সম্পত্তি দখল করে নতুন করে জীবন শুরু করে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তা হয়নি কারণ সেখান থেকে মুসলমানরা তেমনভাবে দেশত্যাগ করেনি। ফলে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় বাঙালি উদ্বাস্তুদের ভিড় জমে এবং তাদের পুনর্বাসন একটি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যা দীর্ঘকাল ধরে চলেছিল। এই পরিস্থিতি মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করে।
ঘ. টীকা লেখো: নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তি।
উত্তর: ১৯৫০-এর গোড়ায় উদ্বাস্তু সমস্যা আরও প্রবল হয়ে ওঠে। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এই সমস্যা সমাধানের জন্য দাবি করেন-হয় বাংলা বিভাগ বাতিল করতে হবে, নয় পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের কিছু জমি ছেড়ে দিতে হবে। এই অবস্থায় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই এপ্রিল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলি খাঁর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশই সংখ্যালঘুদের সমান অধিকার স্বীকার করে নেয়। উদ্বাস্তুরা তাদের সমস্ত অস্থাবর সম্পত্তি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায়। স্থাবর জমি বিক্রি করে সেই অর্থও নিয়ে যেতে পারবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া উদ্বাস্তুরা ইচ্ছা করলেই বিনা বাধায় নিজের দেশে ফিরতে পারবে বলে বলা হয়। এই চুক্তিতে এও বলা হয় যে সংখ্যালঘুমানুষরা যে যার দেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করবে এবং তার কাছেই প্রতিকার চাইবে। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ডঃ ক্ষিতিশচন্দ্র নিয়োগী প্রমুখেরা এই চুক্তির বিরোধিতা করে আরও কঠোর চুক্তির দাবি করেন। বলাবাহুল্য এই চুক্তির পরেও পূর্ববঙ্গ থেকে উদ্বাস্তুদের আসা অব্যাহত থাকে।
ঙ. ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন সম্পর্কে বোম্বাই প্রদেশের মানুষরা কী দাবি করেছিলেন? তাদের দাবি কী স্বীকার করা হয়েছিল?
উত্তর: ভাষাভিত্তিক রাজ্য বিভাজনে বোম্বাই প্রদেশে ব্যাপক প্রতিবাদ গড়ে ওঠে। কারণ এখানে মারাঠী ও গুজরাটি উভয় ভাষার মানুষ ছিল। তারা মারাঠী ও গুজরাটি ভাষা অধ্যুষিত স্বতন্ত্র দুটি রাজ্যের দাবি করেন। এই দাবিতে বোম্বাই প্রদেশে প্রবল গণ আন্দোলন শুরু হয়। ‘সংযুক্ত মহারাষ্ট্র সমিতি’ এবং ‘মহা গুজরাট জনতা পরিষদ’ পৃথকভাবে আন্দোলন গড়ে তোলে। এই পরিস্থিতিতে সরকার বোম্বাই প্রদেশকে ভাষার ভিত্তিতে দুটি পৃথক রাজ্যে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট নামে দুটি নতুন রাজ্য গঠিত হয়। মহারাষ্ট্রের রাজধানী হয় বোম্বাই এবং আমেদাবাদ হয় গুজরাটের রাজধানী। সুতরাং, বোম্বাই প্রদেশের মানুষদের দাবি স্বীকার করা হয়েছিল।
চ. স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?
উত্তর: স্বাধীন ভারতবর্ষে ভাষাগত বৈচিত্র্য প্রাথমিকভাবে জাতীয় সংহতিকে বিপন্ন করে তোলে এবং ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনের বিষয়টি গুরুতর সংকট রূপে দেখা দেয়। স্বাধীনতার আগে থেকেই ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবি উঠেছিল যা স্বাধীনতার পরে আরও জোরদার হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিচারপতি এস. কে. ডর -এর নেতৃত্বে গঠিত কমিশন এবং পরে নেহরু, বল্লভভাই প্যাটেল ও পট্টভি সীতারামাইয়াকে নিয়ে গঠিত জেভিপি কমিটিও জাতীয় ঐক্য, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের বিরোধিতা করে। কিন্তু দক্ষিণ ভারতে, বিশেষত মাদ্রাজ প্রদেশে যেখানে তামিল, তেলুগু, কানাড়ি, মালয়ালম ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করত, সেখানে এই দাবি জোরালো ছিল। শ্রীরামালুর মৃত্যুর পর অন্ধ্র অঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা অক্টোবর মাদ্রাজ প্রদেশের তেলুগু ভাষীদের নিয়ে স্বতন্ত্র অন্ধ্রপ্রদেশের জন্ম হয়। এই ঘটনার পর ভারতবর্ষের অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষও ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। ফলে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশনের সুপারিশে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে ‘রাজ্য পুনর্গঠন আইন’ সংসদে পাশ হয়। এতে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার কথা ঘোষণা করা হয়। এই আইন অনুসারে রাজ্যগুলির সীমানা মূলত ভাষার ভিত্তিতে পুনর্গঠিত হয়। যেমন, হায়দরাবাদ রাজ্যের তেলেঙ্গানা অঞ্চল অন্ধ্রপ্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়; মালাবার জেলা, ত্রিবাঙ্কুর ও কোচিন মিলিয়ে কেরল রাজ্য তৈরি হয়; বোম্বাই, মাদ্রাজ, হায়দরাবাদ ও কুর্গ-এর কন্নড় ভাষী এলাকা মহিশূরের সঙ্গে যুক্ত হয়; কচ্ছ, সৌরাষ্ট্র এবং হায়দরাবাদের মারাঠী ভাষী এলাকা বোম্বাই-এর অন্তর্ভুক্ত হয়; বিহারের পূর্ণিয়া জেলার কিছু অংশ এবং পুরুলিয়া পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে, ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই প্রদেশ ভেঙে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্য গঠিত হয়। ১৯৪৮ ও ১৯৬৪-এর মানচিত্র দুটি তুলনা করলে বোঝা যায় যে ভাষাভিত্তিক রাজ্য বিভাজনের পর ভারতে রাজ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ও মানচিত্র পরিবর্তিত হয়।
অতিরিক্ত (Extras)
বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQs)
১. স্বাধীন ভারতের স্বাধীনতা লাভের তারিখ কী?
ক. ১৫ অগস্ট ১৯৪৭
খ. ১৪ জুলাই ১৯৪৭
গ. ২৬ অক্টোবর ১৯৪৭
ঘ. ১৭ এপ্রিল ১৯৫০
উত্তর: ক. ১৫ অগস্ট ১৯৪৭
৩০. ‘Years of Rehabilitation’ বলতে কোন বছরসমূহকে বোঝায়?
ক. ১৯৪৭–১৯৫২
খ. ১৯৪৫–১৯৫০
গ. ১৯৫২–১৯৫৭
ঘ. ১৯৫০–১৯৫৫
উত্তর: ক. ১৯৪৭–১৯৫২
প্রশ্ন ও উত্তর (Questions, Answers)
১. কতটি দেশীয় রাজ্য স্বাধীনতার সময় ভারতে ছিল?
উত্তর: ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কালে ভারতে দেশীয় রাজ্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০১।
২৬. শ্রীরামালুর আত্মবলিদান ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠনে কী ধরনের প্রভাব ফেলে?
উত্তর: ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে অক্টোবর জনপ্রিয় স্বাধীনতা সংগ্রামী পট্টি শ্রীরামালু অন্ধ্ররাজ্যের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন এবং অনশনরত অবস্থায় তিনি প্রাণ হারান। তাঁর মৃত্যুতে সারা অন্ধ্র জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা শুরু হয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার পৃথক অন্ধ্ররাজ্য নির্মাণের দাবি মেনে নেয় এবং ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা অক্টোবর মাদ্রাজ প্রদেশের তেলেগু ভাষীদের নিয়ে স্বতন্ত্র অন্ধ্রপ্রদেশের জন্ম হয়।
এই ঘটনার পর ভারতবর্ষের অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষও ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের হিংসাত্মক প্রকৃতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে নেহরু ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার প্রয়োজন অনুভব করেন, যার ফলস্বরূপ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করা হয়।
Get notes of other boards, classes, and subjects
Notify change in syllabus/books | Share PDFs of books, get benefits |
Request notes not available now | Share PDFs of question papers |