ভারতের সম্পদ: WBBSE ক্লাস 9 ভূগোল ও পরিবেশ (Bhugol o Poribesh)

ভারতের সম্পদ wbbse
Share + Two Real PDF + Guest PDF
WhatsApp

এখানে (chapter 7) ভারতের সম্পদ: WBBSE ক্লাস ৯ ভূগোল ও পরিবেশ (Bhugol o Poribesh) (বাংলা মাধ্যম)-এর উত্তর, ব্যাখ্যা, সমাধান, নোট, অতিরিক্ত তথ্য, এমসিকিউ এবং পিডিএফ পাওয়া যাবে। নোটগুলো শুধুমাত্র রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন এবং প্রয়োজনমতো পরিবর্তন করতে ভুলবেন না।

Select medium
English medium notes
Bengali medium notes
OFN – Free vs Registered

সারাংশ (summary)

আমরা ভারতের সম্পদ (Bharoter Sompod) নিয়ে কথা বলব। সাধারণভাবে সম্পদ বলতে আমরা টাকা-পয়সা বা দামি জিনিস বুঝি। কিন্তু ভূগোলে, সম্পদ হল এমন কোনও বস্তু বা ধারণা যা মানুষের প্রয়োজন মেটায় বা কোনও কাজে লাগে। এর দুটো জরুরি গুণ হল কার্যকারিতা মানে কাজ করার ক্ষমতা, আর উপযোগিতা মানে অভাব মেটানোর ক্ষমতা। যা কিছু আমাদের কাজে লাগে, তাই সম্পদ হতে পারে, তা সে ছোঁয়া যাক বা না যাক। যেমন মাটি, জল, গাছপালা হল বস্তুগত সম্পদ, আবার মানুষের বুদ্ধি বা জ্ঞান হল অবস্তুগত সম্পদ। ১৯৯২ সালের বসুন্ধরা সম্মেলনে বলা হয়েছে, যা মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রকৃতিকেও রক্ষা করে, সেটাই সম্পদ।

সম্পদ নানা ধরনের হয়। প্রকৃতি থেকে পাওয়া জিনিস, যেমন – মাটি, জল, বাতাস, খনিজ পদার্থ হল প্রাকৃতিক সম্পদ। মানুষ নিজেই একটি সম্পদ, যাকে মানবসম্পদ বলে। আবার মানুষের জ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি দিয়ে যা তৈরি হয়, তা সাংস্কৃতিক সম্পদ। কিছু সম্পদ ব্যবহার করলে শেষ হয়ে যায়, যেমন – কয়লা, খনিজ তেল; এদের গচ্ছিত সম্পদ বলে। আবার কিছু সম্পদ অফুরন্ত, যেমন – সূর্যের আলো, বাতাস; এদের প্রবাহমান বা পুনর্ভব সম্পদ বলে। জীবজগৎ থেকে পাওয়া কাঠ, মাছ হল জৈব সম্পদ আর জড়বস্তু যেমন – পাথর, জল হল অজৈব সম্পদ। কিছু সম্পদ সব জায়গায় পাওয়া যায় (অক্সিজেন), কিছু সহজে মেলে (কৃষিজমি), কিছু কম পাওয়া যায় (টিন), আবার কিছু শুধু এক জায়গাতেই মেলে (ক্রায়োলাইট)। মালিকানার দিক থেকেও সম্পদ ব্যক্তিগত (বাড়ি, গাড়ি), সামাজিক (স্কুল, হাসপাতাল), জাতীয় (রেলপথ) বা আন্তর্জাতিক (সমুদ্রপথ) হতে পারে।

ভারতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ আছে। যেমন, আকরিক লোহা, যা দিয়ে ইস্পাত তৈরি হয় এবং যা আধুনিক সভ্যতার মূল ভিত্তি। ওড়িশা, কর্ণাটক, ঝাড়খণ্ডে প্রচুর লোহা পাওয়া যায়। কয়লা ভারতের প্রধান খনিজ সম্পদ, যা তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ও নানা শিল্পে কাজে লাগে। একে এর গুরুত্বের জন্য ‘কালো হীরে’ও বলা হয়, যদিও এই বইতে তা বলা হয়নি। ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় বেশি কয়লা পাওয়া যায়। খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়ামও খুব দরকারি, বিশেষ করে পরিবহণ ও শিল্পে। এর বিরাট চাহিদার জন্য একে ‘তরল সোনা’ (Torol Sona) বা লিকুইড গোল্ড বলা হয়। ভারতের বেশিরভাগ তেল সমুদ্রের নীচে (বোম্বে হাই) এবং গুজরাট ও আসামে পাওয়া যায়।

শক্তি বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভারত মূলত কয়লার ওপর নির্ভরশীল (তাপবিদ্যুৎ)। এছাড়া নদীর জল ব্যবহার করে জলবিদ্যুৎ এবং পরমাণু থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ তৈরি হয়। আজকাল অপ্রচলিত শক্তি, যেমন – সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ভূতাপ শক্তির ব্যবহার বাড়ছে, কারণ এগুলো অফুরন্ত ও পরিবেশের ক্ষতি কম করে।

যেহেতু অনেক সম্পদ সীমিত, তাই এদের বাঁচিয়ে ব্যবহার করা খুব জরুরি। একে সম্পদ সংরক্ষণ বলে। এর জন্য সম্পদের অপচয় কমানো, পুনর্ব্যবহার করা, কম প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার না করা, নতুন প্রযুক্তিতে কার্যকারিতা বাড়ানো এবং ফুরিয়ে যায় এমন সম্পদের বদলে অফুরন্ত সম্পদ (যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি) বেশি ব্যবহার করা দরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সম্পদ বাঁচিয়ে রাখতেই হবে।

পাঠ্য প্রশ্ন ও উত্তর (Prantik textbook)

সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো

১. ‘সম্পদ’-এর প্রথম সঠিক সংজ্ঞা দেন—

(ক) জিমারম্যান
(খ) ডেভিস
(গ) উইলসন
(ঘ) ওয়েবার

উত্তর: (ক) জিমারম্যান

২. সম্পদ সৃষ্টির প্রধান উপাদান—

(ক) একটি
(খ) দুটি
(গ) তিনটি
(ঘ) চারটি

উত্তর: (গ) তিনটি

৩. অবাধ সম্পদের উদাহরণ হল—

(ক) কয়লা
(খ) পেট্রোলিয়াম
(গ) সূর্যকিরণ
(ঘ) অভ্র

উত্তর: (গ) সূর্যকিরণ

৪. প্রাকৃতিক সম্পদের একটি উদাহরণ হল—

(ক) মাটি
(খ) জনসংখ্যা
(গ) শিক্ষা
(ঘ) লোহা

উত্তর: (ক) মাটি

৫. ব্যক্তিগত সম্পদের একটি উদাহরণ হল—

(ক) গাড়ি
(খ) হাসপাতাল
(গ) জাতীয় সড়ক
(ঘ) রেল পরিসেবা

উত্তর: (ক) গাড়ি

৬. বস্তুগত একটি সম্পদ হল—

(ক) জল,
(খ) শিক্ষা,
(গ) বিজ্ঞান,
(ঘ) জনসংখ্যা।

উত্তর: (ক) জল

৭. লৌহ-আকরিক উৎপাদনে ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে—

(ক) গোয়া
(খ) ছত্তিশগড়
(গ) ঝাড়খণ্ড
(ঘ) রাজস্থান
(ঙ) ওড়িশা

উত্তর: (ঙ) ওড়িশা

৮. ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ খনিজ তেল উৎপাদক রাজ্য হল—

(ক) মহারাষ্ট্র
(খ) অসম
(গ) গুজরাট
(ঘ) পশ্চিমবঙ্গ

উত্তর: (ক) মহারাষ্ট্র

৯. গুজরাটের একটি তৈল শোধনাগারের নাম হল—

(ক) কয়ালি
(খ) নুনমাটি
(গ) সরগুজা
(ঘ) তালচের

উত্তর: (ক) কয়ালি

১০. সবচেয়ে উন্নত মানের লৌহ-আকরিকের নাম—

(ক) সিডেরাইট
(খ) অ্যানথ্রাসাইট
(গ) ম্যাগনেটাইট
(ঘ) পিট

উত্তর: (গ) ম্যাগনেটাইট

১১. ভারত থেকে সর্বাধিক লৌহ আকরিক রপ্তানি করা হয়—

(ক) ইতালিতে
(খ) জার্মানিতে
(গ) জাপানে
(ঘ) চিনে

উত্তর: (গ) জাপানে

১২. খনিজ তেল উত্তোলনে ভারতের উল্লেখযোগ্য রাজ্যটি হল—

(ক) উত্তরপ্রদেশ
(খ) মহারাষ্ট্র
(গ) তামিলনাড়ু
(ঘ) ওড়িশা

উত্তর: (খ) মহারাষ্ট্র

১৩. ভারতের বৃহত্তম কয়লাখনি অঞ্চল হল—

(ক) রানিগঞ্জ
(খ) ঝরিয়া
(গ) সিঙ্গারেনি
(ঘ) আমেদাবাদ

উত্তর: (খ) ঝরিয়া

১৪. সবচেয়ে উৎকৃষ্ট শ্রেণির কয়লার নাম—

(ক) অ্যানথ্রাসাইট
(খ) বিটুমিনাস
(গ) লিগনাইট
(ঘ) সিডেরাইট

উত্তর: (ক) অ্যানথ্রাসাইট

১৫. ‘তরল সোনা’ বলা হয়—

(ক) কয়লাকে
(খ) খনিজ তেলকে
(গ) আকরিক লোহাকে
(ঘ) অভ্রকে

উত্তর: (খ) খনিজ তেলকে

১৬. অপ্রচলিত শক্তির উৎস হল—

(ক) কয়লা
(খ) সৌরশক্তি
(গ) খনিজ তেল
(ঘ) লোহা

উত্তর: (খ) সৌরশক্তি

১৭. পশ্চিমবঙ্গের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হল—

(ক) মাইথন
(খ) পাঞ্চেৎ
(গ) ব্যান্ডেল
(ঘ) বক্রেশ্বর

উত্তর: (গ) ব্যান্ডেল

১৮. ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ—

(ক) পাঞ্জাবের ভাকরা
(খ) কর্ণাটকের শিবসমুদ্রম
(গ) ওড়িশার হীরাকুঁদ
(ঘ) পশ্চিমবঙ্গের জলঢাকা

উত্তর: (ক) পাঞ্জাবের ভাকরা

১৯. তাপবিদ্যুতের প্রধান কাঁচামাল হল—

(ক) খনিজ তেল
(খ) জল
(গ) কয়লা
(ঘ) আকরিক লোহা

উত্তর: (গ) কয়লা

২০. সৌরশক্তির প্রধান উৎস—

(ক) বায়ুপ্রবাহ
(খ) ভূগর্ভের উত্তাপ
(গ) সূর্যরশ্মি
(ঘ) কয়লা

উত্তর: (গ) সূর্যরশ্মি

বাক্যটি ‘সত্য’ হলে ‘ঠিক’ এবং ‘অসত্য’ হলে ‘ভুল’ লেখো

১. সম্পদের উপযোগিতা আছে কিন্তু কার্যকারিতা নেই।

উত্তর: ভুল

কারণ: কোনো বস্তুকে সম্পদ হতে হলে তার উপযোগিতা এবং কার্যকারিতা, এই দুটি গুণই থাকতে হবে। শুধু উপযোগিতা থাকলেই তাকে সম্পদ বলা যায় না যদি তার কার্যকারিতা না থাকে।

২. ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে বসুন্ধরা সম্মেলন হয়েছিল রিয়ো-ডি-জেনিরো শহরে।

উত্তর: ঠিক

কারণ: ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিয়ো-ডি-জেনিরো শহরে বসুন্ধরা সম্মেলন (Earth Summit) অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে সম্পদের এক নতুন সংজ্ঞা দেওয়া হয়।

৩. ফসল সম্পদ নয়, ফসলের কার্যকারিতাই হল সম্পদ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: কোনো বস্তু নিজে সম্পদ নয়, তার কাজ করার ক্ষমতাই তাকে সম্পদে পরিণত করে। যেমন, খরা বা বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলের কোনো কার্যকারিতা বা মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতা থাকে না, তাই তা সম্পদ নয়। কিন্তু ভালো ফসল মানুষের অভাব মেটায়, তাই তার কার্যকারিতাই সম্পদ।

৪. লাইব্রেরি, স্কুল-কলেজ হল সামাজিক সম্পদ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: যে সমস্ত সম্পদ সমাজের সকল মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য বা মঙ্গলের জন্য তৈরি করা হয়, যেমন – লাইব্রেরি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদি, সেগুলিকে সামাজিক সম্পদ বলা হয়।

৫. কুমেরু মহাদেশ একটি আন্তর্জাতিক সম্পদের উদাহরণ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: যে সম্পদ কোনো নির্দিষ্ট দেশের নয়, বরং সমগ্র বিশ্ববাসীর কল্যাণে ব্যবহৃত হয় এবং সারা পৃথিবীর উপকারে লাগে, তাকে আন্তর্জাতিক সম্পদ বলে। কুমেরু মহাদেশ এর একটি উদাহরণ।

৬. জল ও বাতাস হল প্রাথমিক সম্পদ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: যে সমস্ত সম্পদ প্রকৃতি থেকে সরাসরি পাওয়া যায়, যেমন – সৌরতাপ, জল, বাতাস, সেগুলিকে প্রাথমিক সম্পদ বলা হয়।

৭. কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান খনিজ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান খনিজসম্পদ এবং এটি দেশের শক্তি উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

৮. আকরিক লোহার সঞ্চয়ে পৃথিবীতে ভারতের স্থান তৃতীয়।

উত্তর: ভুল

কারণ: ভূগর্ভে সঞ্চিত আকরিক লোহার পরিমাণের বিচারে ভারত পৃথিবীতে পঞ্চম স্থান অধিকার করে, তৃতীয় নয়।

৯. সবচেয়ে উৎকৃষ্ট আকরিক লৌহ আকরিকের নাম হল হেমাটাইট।

উত্তর: ভুল

কারণ: ম্যাগনেটাইট হলো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বা অতি উঁচু জাতের লৌহ আকরিক, যাতে ধাতব লোহার পরিমাণ প্রায় ৭২.৪% থাকে। হেমাটাইট উঁচু জাতের হলেও তাতে লোহার পরিমাণ ম্যাগনেটাইটের চেয়ে কম (প্রায় ৭০%) থাকে।

১০. নুনমাটি খনিজ তৈল শোধনাগার হিসেবে খ্যাত।

উত্তর: ঠিক

কারণ: নুনমাটি ভারতের একটি পরিচিত খনিজ তৈল শোধনাগার।

১১. মহারাষ্ট্রের একটি প্রধান খনিজ তৈল শোধনাগার হল কয়ালি।

উত্তর: ভুল

কারণ: কয়ালি তৈল শোধনাগারটি গুজরাট রাজ্যে অবস্থিত, মহারাষ্ট্রে নয়।

১২. কালো হিরে বলে বক্সাইটকে।

উত্তর: ভুল

কারণ: কয়লাকে তার অর্থনৈতিক গুরুত্ব এবং রঙের জন্য অনেক সময় ‘কালো হিরে’ বলা হয়ে থাকে, বক্সাইটকে নয়।

১৩. ভারতে অ্যানথ্রাসাইট কয়লা পাওয়া যায় একমাত্র ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়ায়।

উত্তর: ভুল

কারণ: ভারতে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের অ্যানথ্রাসাইট কয়লা প্রধানত জম্মু ও কাশ্মীরে পাওয়া যায়, ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়ায় নয়। ঝরিয়া উন্নত মানের বিটুমিনাস কয়লার জন্য বিখ্যাত।

১৪. অসমের ডিগবয় ভারতের প্রাচীনতম তৈল উৎপাদক কেন্দ্র।

উত্তর: ঠিক

কারণ: অসম রাজ্যের ডিগবয় তৈলখনিটি হলো ভারতের সবচেয়ে পুরোনো বা প্রাচীনতম তৈল উৎপাদক কেন্দ্র।

১৫. খনিজ তৈলের প্রধান দুটি উপজাত দ্রব্য হল পেট্রোলিয়াম ও ডিজেল।

উত্তর: ঠিক

কারণ: খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়াম শোধন করে যে বিভিন্ন দরকারি জিনিস পাওয়া যায়, তার মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উৎপাদিত দ্রব্য।

১৬. গুজরাট রাজ্যের আঙ্কলেশ্বর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেলের খনি।

উত্তর: ঠিক

কারণ: গুজরাটের আঙ্কলেশ্বর তৈল ক্ষেত্রটি ভারতের একটি অন্যতম বৃহৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ তৈলখনি।

১৭. উত্তর ভারতের তুলনায় দক্ষিণ ভারতে বেশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।

উত্তর: ভুল

কারণ: যদিও দক্ষিণ ভারতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বন্ধুর ভূপ্রকৃতি ও জলপ্রপাত সুবিধাজনক, কিন্তু সেখানকার নদীগুলি বর্ষাকাল ছাড়া প্রায় শুকিয়ে যায়। অন্যদিকে উত্তর ভারতের নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে, যেখানে বাঁধ দিয়ে প্রচুর জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। তাই দক্ষিণ ভারতে উৎপাদন বেশি নয়।

১৮. গুজরাটের লাম্বায় ভারতের বৃহত্তম বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র অবস্থিত।

উত্তর: ঠিক

কারণ: গুজরাটের লাম্বা ভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহৎ বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্র।

১৯. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের গোসাবাতে বৃহদায়তন জৈব গ্যাস প্রকল্প চালু হয়েছে।

উত্তর: ঠিক

কারণ: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের গোসাবাতে জৈব বর্জ্য ব্যবহার করে গ্যাস উৎপাদনের জন্য একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

২০. ভারতের প্রথম দুটি সৌরশক্তি উৎপাদনকেন্দ্র হল উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলার কল্যাণপুর ও মউ।

উত্তর: ঠিক

কারণ: উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলার কল্যাণপুর ও মউতে ভারতের প্রথমদিকের সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম স্থাপিত হয়েছিল।

২১. ভারতে প্রথম বেঙ্গালুরুতে ও পরে দিল্লিতে শহরের আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

উত্তর: ঠিক

কারণ: বেঙ্গালুরু এবং দিল্লি শহরে পৌর আবর্জনা বা বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে।

২২. দক্ষিণ ভারতের খরস্রোতা নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পক্ষে সহায়ক নয়।

উত্তর: ভুল

কারণ: দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির খাড়া ঢাল এবং খরস্রোতা জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সহায়ক। তবে নদীগুলিতে জলের পরিমাণ সারাবছর সমান না থাকাটা একটা অসুবিধা।

২৩. তামিলনাড়ুর পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রটির নাম হল কলাপকম।

উত্তর: ঠিক

কারণ: তামিলনাড়ু রাজ্যে অবস্থিত ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হলো কলাপক্কম।

উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো

১. সেই বস্তুকে সম্পদ বলে যার ______ ও কার্যকারিতা আছে।

উত্তর: উপযোগিতা

২. মানুষই হল একধরনের সম্পদ যাকে বলে ______ সম্পদ।

উত্তর: মানব

৩. গচ্ছিত সম্পদের পরিমাণ ______।

উত্তর: নির্দিষ্ট

৪. হেমাটাইটে লোহার পরিমাণ ______ শতাংশ।

উত্তর: ৭০

৫. ভারতে সবচেয়ে বেশি আকরিক লোহা পাওয়া যায় ______।

উত্তর: হেমাটাইট

৬. ______ ভারতের সর্বপ্রধান শক্তিসম্পদ।

উত্তর: কয়লা

৭. ______ সর্বোৎকৃষ্ট কয়লা।

উত্তর: অ্যানথ্রাসাইট

৮. আরব সাগরের দরিয়া অঞ্চল খনিজ তেল উৎপাদনে ভারতের মধ্যে ______ স্থানীয়।

উত্তর: প্রথম

৯. বায়ুশক্তি হল একটি ______ শক্তি।

উত্তর: অপ্রচলিত

১০. ফারাক্কায় একটি ______ কেন্দ্র আছে।

উত্তর: তাপবিদ্যুৎ

. সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ______ ভারতের শীর্ষস্থান অধিকারী রাজ্য।

উত্তর: গুজরাট

১২. ______ সোলার পার্কটি হল ভারত তথা এশিয়ার বৃহত্তম সোলার পার্ক।

উত্তর: চরণকা সোলার পার্কটি

. ______ হল ভারতের বৃহত্তম লিগনাইট খনি।

উত্তর: তামিলনাড়ুর নিয়েভেলি

স্তম্ভ মেলাও

১.

ক (বামদিক)খ (ডানদিক)
১। জলবিদ্যুৎ শক্তি① ৭০% লৌহ আকরিক
২। হেমাটাইট② হাওয়া কল
৩। ম্যাগনেটাইট③ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
৪। বক্রেশ্বর④ ৭২.৪% লৌহ আকরিক
৫। বায়ুশক্তি⑤ প্রবাহমান শক্তি

উত্তর:

ক (বামদিক)খ (ডানদিক)
১। জলবিদ্যুৎ শক্তি⑤ প্রবাহমান শক্তি
২। হেমাটাইট① ৭০% লৌহ আকরিক
৩। ম্যাগনেটাইট④ ৭২.৪% লৌহ আকরিক
৪। বক্রেশ্বর③ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
৫। বায়ুশক্তি② হাওয়া কল

২.

ক (বামদিক)খ (ডানদিক)
১। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র① তাপবিদ্যুৎ
২। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র② পারমাণবিক বিদ্যুৎ
৩। থার্মাল পাওয়ার③ PY-6
৪। নিউক্লিয়ার পাওয়ার④ তারাপুর
৫। তৈলখনি⑤ পাঞ্চেৎ

উত্তর:

ক (বামদিক)খ (ডানদিক)
১। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র⑤ পাঞ্চেৎ
২। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র④ তারাপুর
৩। থার্মাল পাওয়ার① তাপবিদ্যুৎ
৪। নিউক্লিয়ার পাওয়ার② পারমাণবিক বিদ্যুৎ
৫। তৈলখনি③ PY-6
দু-এক কথায় উত্তর দাও

১. সম্পদের একটি সংজ্ঞা দাও।

উত্তর: যে-কোনো বস্তু বা অবস্তু, যা তার কার্যকারিতার মাধ্যমে মানুষের চাহিদাপূরণের সঙ্গে জীবমণ্ডলের সংরক্ষণকেও সুনিশ্চিত করে, তাকেই সম্পদ বলে গণ্য করা যায়।

২. গচ্ছিত সম্পদ কাকে বলে?

উত্তর: যেসব সম্পদের পরিমাণ নির্দিষ্ট এবং ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে যেসব সম্পদ ক্রমশ নিঃশেষিত হয়, সেইসব সম্পদই হল গচ্ছিত সম্পদ।

৩. অবাধ সম্পদ কাকে বলে?

উত্তর: যেসব সম্পদের পরিমাণ অসীম, ক্রমাগত ব্যবহারের ফলেও যা নিঃশেষিত হয় না, সেইসব সম্পদই হল অবাধ বা পুনর্ভব সম্পদ।

৪. ভারতে কোন্ কোন্ শ্রেণির কয়লা পাওয়া যায়?

উত্তর: ভারতে প্রধানত চার শ্রেণির কয়লা পাওয়া যায়, যেমন: অ্যানথ্রাসাইট, বিটুমিনাস, লিগনাইট ও পিট কয়লা। ভারতে প্রধানত গন্ডোয়ানা যুগের (বিটুমিনাস) এবং টার্শিয়ারি যুগের (লিগনাইট) কয়লা সঞ্চিত আছে।

৫. কয়লার দুটি উপজাত দ্রব্যের নাম করো।

উত্তর: কয়লার দুটি উপজাত দ্রব্য হল কোল গ্যাস এবং পিচ ও আলকাতরা।

৬. ভারতের ব্যবহৃত প্রধান দুটি চিরাচরিত বা প্রচলিত শক্তি উৎসের নাম লেখো।

উত্তর: ভারতের ব্যবহৃত প্রধান দুটি চিরাচরিত বা প্রচলিত শক্তি উৎস হল তাপবিদ্যুৎ (কয়লা, খনিজ তেল বা প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে উৎপন্ন) এবং জলবিদ্যুৎ।

৭. সৌরবিদ্যুৎকে কী কী কাজে ব্যবহার করা হয়?

উত্তর: সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎকে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল ও দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে আলো জ্বালানো, টিভি সেট চালানো, বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে খাবার জল ও ছোটোখাটো সেচ প্রকল্পের জল তোলা, রেলওয়ে সিগনালিং ও রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ব্যাবসাবাণিজ্য ও রিমোট মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমের কাজে লাগানো হচ্ছে।

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো

১. ফসল সম্পদ নয়, ফসলের কার্যকারিতাই হল সম্পদ। উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: মানুষ জমিতে কৃষিকাজ করে ফসল উৎপাদন করে, কিন্তু খরা, বন্যা অথবা ঝড়বৃষ্টির ফলে যদি ওই ফসল নষ্ট হয়ে যায় তবে মানুষের অভাব পূরণ হয় না। যেহেতু মানুষের অভাবমোচনে ওই নষ্ট হওয়া ফসলের কোনো কার্যকারিতা নেই, সেইজন্য তা সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হবে না। অর্থাৎ ফসল সম্পদ নয়, ফসলের কার্যকারিতাই সম্পদ।

২. ভারতের তিনটি কয়লাখনি অঞ্চলের নাম লেখো।

উত্তর: ভারতের তিনটি প্রধান কয়লাখনি অঞ্চল হল ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া, পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ এবং ওড়িশার তালচের।

৩. গুজরাটে অবস্থিত তিনটি তৈল শোধনাগারের নাম করো।

উত্তর: গুজরাটে অবস্থিত তিনটি প্রধান তৈল শোধনাগার হল কোয়ালি শোধনাগার, জামনগর শোধনাগার, ভাদিনার শোধনাগার।

৪. উত্তর-পূর্ব ভারতের তিনটি খনিজ তৈল উত্তোলন কেন্দ্রের নাম করো।

উত্তর: উত্তর-পূর্ব ভারতের তিনটি প্রধান খনিজ তৈল উত্তোলন কেন্দ্র হল আসামের ডিগবয়, নাহারকাটিয়া এবং মোরান।

৫. ভারতের তিনটি খনিজ তেল উৎপাদক অঞ্চলের নাম করো।

উত্তর: ভারতের তিনটি প্রধান খনিজ তেল উৎপাদক অঞ্চল হল উত্তর-পূর্ব ভারতের তৈলখনি, পশ্চিম ভারতের তৈলখনি এবং আরব সাগরের দরিয়া অঞ্চলের তৈলখনি।

৬. টার্শিয়ারি কয়লা সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: আনুমানিক ৭ কোটি বছর আগে টার্শিয়ারি কয়লার স্তর গঠিত হয়। এই কয়লা নিম্নশ্রেণির লিগনাইট জাতীয় কয়লা। ভারতে সঞ্চিত টার্শিয়ারি কয়লার পরিমাণ প্রায় ১,৪৯৩ কোটি টন, যা ভারতের মোট কয়লা সঞ্চয়ের প্রায় ০.৫%। লিগনাইট কয়লা প্রধানত গুজরাট, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, কেরল, পুদুচেরী এবং তামিলনাড়ু-তে পাওয়া যায়। ভারতে লিগনাইট কয়লার আনুমানিক সঞ্চয়ের পরিমাণ প্রায় ৪১,৯০৩ কোটি টন, যার প্রায় ৭৭% তামিলনাড়ু রাজ্যে অবস্থিত, বিশেষত নিয়েভেলি কয়লা খনিতে।

৭. কয়লার গুরুত্ব সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান শক্তিসম্পদ এবং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। কয়লা পুড়িয়ে উৎপন্ন তাপবিদ্যুৎ দেশের শক্তির চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করে। এটি কলকারখানা, রেলইঞ্জিন, জাহাজ চালাতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া, বিভিন্ন ধাতু নিষ্কাশন, রান্নার কাজ, শীতপ্রধান অঞ্চলে ঘর গরম রাখা, রাস্তা তৈরির পিচ গলানো, ইট ও টালি পোড়ানো ইত্যাদি কাজে কয়লা লাগে। কয়লা থেকে প্রস্তুত কোক লৌহ-ইস্পাত শিল্পের অন্যতম প্রধান কাঁচামাল। কয়লা থেকে উৎপন্ন কোল গ্যাস এবং প্রায় ১৬,০০০ উপজাত দ্রব্য (যেমন স্যাকারিন, পিচ, আলকাতরা, ন্যাপথালিন, বেঞ্জল, ফেনল, অ্যামোনিয়া ইত্যাদি) রাসায়নিক শিল্পে অতি প্রয়োজনীয়, যা থেকে সাবান, রং, ওষুধ, সুগন্ধি দ্রব্য, আঠা, প্লাস্টিক, কৃত্রিম তেল প্রভৃতি পাওয়া যায়।

৮. বম্বে হাই কাকে বলে?

উত্তর: আরব সাগরের মহীসোপানে সমুদ্রগর্ভে অবস্থিত ভারতের তৈলখনিকে বোম্বে হাই বলে।

৯. খনিজ তেলের গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: খনিজ তেলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম এবং আধুনিক যুগে এর ব্যবহার বিভিন্নমুখী। পরিবহণ ব্যবস্থায় এরোপ্লেন, মোটরগাড়ি, বাস, ট্রাক, মোটর সাইকেল, রেলইঞ্জিন, জাহাজ প্রভৃতির জ্বালানি হিসেবে এটি অপরিহার্য। কলকারখানায় মেশিন চালানোর জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল বা গ্যাসোলিন এবং ডিজেল ব্যবহার করা হয়। সামরিক প্রয়োজনে আধুনিক যুদ্ধে ট্যাংক, যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন, যুদ্ধ বিমান প্রভৃতি চালানোর জন্য খনিজ তেল লাগে। খনিজ তেলের উপজাত বিভিন্ন পিচ্ছিলকারক জিনিস (যেমন মবিল, গ্রিজ) পরিবহণ শিল্প এবং যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়। ঘরোয়া প্রয়োজনে কেরোসিন দিয়ে লণ্ঠন, স্টোভ জ্বালাতে এবং ডিজেল, পেট্রোল বা কেরোসিন দিয়ে জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে কাজে লাগে। ন্যাপথা পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১০. মানবসম্পদ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: যে-কোনো সম্পদের প্রধান চালিকাশক্তি হল মানুষ। সেই কারণে সুশিক্ষিত স্বাস্থ্যবান জনসমষ্টি যে-কোনো দেশের মূল্যবান সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত হয়। সুতরাং মানুষই হল এক ধরনের সম্পদ যাকে মানবসম্পদ বলা হয়।

১১. তেলের কার্যকারিতাই সম্পদ -বুঝিয়ে লেখো।

উত্তর: গুজরাটের কালোল, আঙ্কলেশ্বর ও ক্যাম্বে (খাম্বাত) উপসাগরীয় অঞ্চলের মাটির নীচে হাজার হাজার বছর ধরে খনিজ তেল সঞ্চিত থাকলেও স্বাধীনতার আগে ভারতের মানুষ ওই তেলের সন্ধান না-পাওয়ায় তা ভারতীয় জনসাধারণের কোনো কাজে আসেনি। স্বাধীনতার পর ভারত সরকারের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশনের প্রচেষ্টায় গুজরাটের এইসব স্থানের আবিষ্কৃত খনিজ তেল উত্তোলন করে মানুষের নানান কাজে ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে ওই তেল সম্পদে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ তেল নিজে সম্পদ নয়, তেলের কার্যকারিতাই সম্পদ।

১২. লৌহ আকরিকের গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: লৌহ আকরিক বর্তমানে যন্ত্রসভ্যতার যুগের অন্যতম প্রধান ধারক এবং বাহক। আকরিক লৌহ থেকে প্রাপ্ত লোহা ও ইস্পাত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের প্রায় প্রতিটি কাজে ব্যবহৃত হয়। গৃহনির্মাণ ও ঘর-গৃহস্থালির সামগ্রী (যেমন পেরেক, আলপিন, লোহার রড, বিম, হাতা-খুন্তি, কড়াই, ছুরি, কাঁচি), কৃষিক্ষেত্রের যন্ত্রপাতি (যেমন লাঙল, কোদাল, কাস্তে, ট্র্যাক্টর), পরিবহণ সামগ্রী (যেমন সেতু, রেলপথ, রাস্তাঘাট, মোটরগাড়ি, রেল ইঞ্জিন, এরোপ্লেন, জাহাজ), প্রতিরক্ষা সামগ্রী ও অস্ত্রশস্ত্র (যেমন কামান, যুদ্ধ জাহাজ, ট্যাংক, বাংকার) এবং ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী যন্ত্রপাতি (যেমন বাটালি, সাঁড়াশি, চিমটে, টারবাইন, বয়লার) প্রস্তুত করতে লোহা ও ইস্পাত অপরিহার্য। বাড়িঘর, কলকারখানা, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি, যানবাহন, সেতু, রাস্তাঘাট, রং শিল্প, রেললাইন, অস্ত্রশস্ত্র ও দেশরক্ষায় এর ব্যাপক ব্যবহারের কারণে বর্তমান যুগকে লৌহযুগ বলা হয়।

১৩. অপ্রচলিত শক্তি বলতে কী বোঝ?

উত্তর: বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের জন্য যে সমস্ত শক্তির ব্যবহার এখনও পর্যন্ত ব্যাপকভাবে প্রচলিত নেই, সেইসব শক্তিকেই সাধারণভাবে অপ্রচলিত শক্তি বলে।

১৪. পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তি কাকে বলে?

উত্তর: অতি উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, প্লুটোনিয়াম, লিথিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরমাণু বিভাজন করে ব্যবহারের উপযুক্ত শক্তি উৎপাদন করা হয়, যাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তি বলে।

১৫. ভূতাপ শক্তির ব্যবহার লেখো।

উত্তর: ভূতাপ শক্তির সাহায্যে আঞ্চলিকভাবে কোনো ছোটো জায়গার বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যায়।

সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো

১. সম্পদ সৃষ্টির উপাদান অনুসারে সম্পদের শ্রেণিবিভাগ করো এবং তাদের উদাহরণ দাও।

উত্তর: সম্পদ সৃষ্টির উপাদান অনুসারে সম্পদকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

  • প্রাকৃতিক সম্পদ: যে সম্পদ প্রকৃতি থেকে স্বাভাবিক ভাবে পাওয়া যায়। উদাহরণ: সূর্যকিরণ, মাটি, জল, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি।
  • মানবিক সম্পদ: যে সম্পদ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠে। উদাহরণ: জনসংখ্যা, শ্রমশক্তি, কর্মদক্ষতা প্রভৃতি।
  • সাংস্কৃতিক সম্পদ: মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, নৈপুণ্য, অনুশাসন, শিক্ষা প্রভৃতির মাধ্যমে যে সম্পদ উদ্ভূত হয়। উদাহরণ: শিক্ষা, শিল্প, প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী শক্তি, সংগঠন প্রভৃতি।

২. গচ্ছিত সম্পদের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখো।

উত্তর: গচ্ছিত সম্পদের বৈশিষ্ট্যগুলি হল:

  • এসব সম্পদের পরিমাণ নির্দিষ্ট।
  • এগুলো পৃথিবীতে অসমানভাবে বণ্টিত অর্থাৎ এদের পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায় না।
  • ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে এই সম্পদ নিঃশেষিত হয়।
  • গচ্ছিত সম্পদ পুনর্নবীকরণযোগ্য নয়, অর্থাৎ একবার নিঃশেষিত হয়ে গেলে নতুন করে আবার সৃষ্টি হয় না।
  • গচ্ছিত সম্পদের উত্তোলন বা উৎপাদন ব্যয় যথেষ্ট বেশি।
  • কাঁচামাল হিসেবে শিল্পক্ষেত্রে গচ্ছিত সম্পদের ব্যবহার বেশি।
  • গচ্ছিত সম্পদের ব্যবহার অনেক সময় পরিবেশদূষণ ঘটায়।

৩. অবাধ সম্পদের কী কী বৈশিষ্ট্য আছে?

উত্তর: অবাধ সম্পদের বৈশিষ্ট্যগুলি হল:

  • এসব সম্পদের পরিমাণ অসীম বা অফুরন্ত।
  • অবাধ সম্পদ পৃথিবীর সর্বত্র সমানভাবে বণ্টিত হয়েছে, অর্থাৎ এদের সর্বত্র পাওয়া যায়।
  • বারংবার ব্যবহার করলেও এই ধরনের সম্পদ নিঃশেষিত হয় না।
  • অবাধ সম্পদ পুনর্নবীকরণযোগ্য অর্থাৎ নিঃশেষিত হলেও আবার সৃষ্টি হয়।
  • অবাধ সম্পদের উৎপাদন ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম।
  • শিল্পক্ষেত্রে কাঁচামাল হিসেবে অবাধ সম্পদের ব্যবহার কম।
  • অবাধ সম্পদের ব্যবহারে সাধারণত পরিবেশ দূষণ ঘটে না।

৪. সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তর: বিভিন্ন কারণে সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়, যেমন: ① সম্পদের ভবিষ্যৎ জোগান অব্যাহত রাখা, ② গচ্ছিত ও ক্ষয়িষু সম্পদের (যেমন: খনিজ তেল, কয়লা প্রভৃতি) আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা ③ প্রবহমান সম্পদকে (যেমন : বাতাস, নদী বা সমুদ্রের জল প্রভৃতি) দূষণমুক্ত রাখা; ④ পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা, ⑤ জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ করা, ⑥ ভাবী প্রজন্মকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করা প্রভৃতি।

৫. লৌহ-আকরিকের ব্যবহার ও গুরুত্ব কী?

উত্তর: বর্তমানে যন্ত্রসভ্যতার যুগের অন্যতম প্রধান ধারক এবং বাহক হচ্ছে আকরিক লৌহ। আকরিক লৌহকে খনি থেকে তুলে তা বিভিন্ন উপায়ে পরিস্তুত করে বিশুদ্ধ কাঁচা লোহা পাওয়া যায়; কাঁচা লোহার সঙ্গে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন অনুপাতে ক্রোমিয়াম, টাংস্টেন, নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বন প্রভৃতি মিশ্রিত করে বিভিন্ন ধরনের ইস্পাত তৈরি করা হয়; প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের প্রায় প্রতিটি কাজে লোহা ও ইস্পাত ব্যবহার করা হয়, যেমন:

① গৃহনির্মাণ ও ঘর-গৃহস্থালির সামগ্রী তৈরিতে (যেমন: পেরেক, আলপিন, লোহার রড, বিম, হাতা-খুন্তি, কড়াই, ছুরি, কাঁচি প্রভৃতি প্রস্তুতিতে)।
② কৃষিক্ষেত্রে ও কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণে (যেমন: লাঙল, কোদাল, কাস্তে, ট্র্যাক্টর প্রভৃতি প্রস্তুতিতে),
③ পরিবহণ সামগ্রী নির্মাণে (যেমন: সেতু, রেলপথ, রাস্তাঘাট, মোটরগাড়ি, রেল ইঞ্জিন, এরোপ্লেন, জাহাজ প্রভৃতি প্রস্তুতিতে),
④ প্রতিরক্ষা সামগ্রী ও অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণে (যেমন : কামান, যুদ্ধ জাহাজ, ট্যাংক, বাংকার প্রভৃতি নির্মাণে),
⑤ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী যন্ত্রপাতি প্রস্তুত করতে (যেমন: বাটালি, সাঁড়াশি, চিমটে থেকে টারবাইন, বয়লার প্রভৃতি প্রস্তুতিতে)—এককথায় বাড়িঘর, কলকারখানা, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি, যানবাহন, সেতু, রাস্তাঘাট, রং শিল্প, রেললাইন, অস্ত্রশস্ত্র ও দেশরক্ষায় লোহা এবং ইস্পাতের ব্যবহার আজ এতই ব্যাপক এবং বহুধাবিস্তৃত যে, বর্তমান যুগকে এককথায় লৌহযুগ বলা যায়।

৬. আকরিক লোহার শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তর: লৌহ আকরিকের মধ্যে ধাতব লোহার পরিমাণ অনুসারে লৌহ আকরিককে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন: ① হেমাটাইট (উঁচু জাতের লৌহ আকরিক : এতে ধাতব লোহার পরিমাণ ৭০%), ② ম্যাগনেটাইট (অতি উঁচু জাতের লৌহ আকরিক : এতে ধাতব লোহা ৭২.৪%), ③ লিমোনাইট (মাঝারি জাতের লৌহ আকরিক : এতে ধাতব লোহার পরিমাণ ৬২.৯%) এবং ④ সিডেরাইট (নীচু মানের লৌহ আকরিক : এতে ধাতব লোহার পরিমাণ ৪৮.২%)।

৭. কয়লার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ব্যবহারের উল্লেখ করো।

উত্তর: কয়লা ভারতের সর্বপ্রধান খনিজসম্পদ ও সর্বপ্রধান শক্তিসম্পদ। এদেশে কয়লা পুড়িয়ে তা থেকে উৎপন্ন শক্তির সাহায্যে কলকারখানা, রেলইঞ্জিন, জাহাজ প্রভৃতি চালানো হয়। যদিও এসমস্ত ক্ষেত্রে খনিজ তেল কয়লার স্থান দ্রুতগতিতে দখল করে নিচ্ছে, তবুও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারতের মতো কয়লা-প্রধান দেশে কয়লার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। এ ছাড়া আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কয়লার গুরুত্ব বলে বোঝানোর অপেক্ষা রাখে না।

কয়লার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার : ① কয়লা দিয়ে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, এ ছাড়া ② বিভিন্ন ধাতু নিষ্কাশন করতে, ③ বাষ্পীয় জাহাজ ও রেলইঞ্জিন চালাতে, ④ রান্নার কাজে, ⑤ শীতপ্রধান অঞ্চলে ঘর গরমের কাজে, ⑥ রাস্তা তৈরির পিচ গলাতে এবং ⑦ ইট, টালি প্রভৃতি পোড়ানোর কাজে কয়লা ব্যবহার করা হয়, ⑧ কয়লা থেকে প্রস্তুত কোক হল লৌহ-ইস্পাত শিল্পের অন্যতম প্রধান কাঁচামাল এবং ⑨ কয়লা থেকে উৎপন্ন কোল গ্যাস বিভিন্ন কলকারখানা ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। ⑩ কয়লার বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য রাসায়নিক শিল্পে অতি প্রয়োজনীয়।

৮. ভারতীয় কয়লার শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তর: কার্বনের উপস্থিতির হার অনুসারে কয়লাকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন: ① অ্যানথ্রাসাইট: (সর্বোৎকৃষ্ট কয়লা, এতে কার্বনের পরিমাণ ৯০%-৯৫%); ② বিটুমিনাস : (মধ্যম শ্রেণির কয়লা : কার্বনের পরিমাণ ৫০% থেকে ৮৫%); ③ লিগনাইট : (তৃতীয় শ্রেণির কয়লা : কার্বনের পরিমাণ ৩৫% থেকে ৫০%); ④ পিট কয়লা: (সবচেয়ে খারাপ জাতের কয়লা, এতে কার্বনের পরিমাণ মাত্র ৩০% থেকে ৩৫%)। ভারতে প্রধানত ① গন্ডোয়ানা এবং ② টার্শিয়ারি যুগের কয়লা সঞ্চিত আছে।

৯. খনিজ তেলের ব্যবহারগুলো লেখো।

উত্তর: আধুনিক যুগে খনিজ তেলের ব্যবহার বিভিন্নমুখী, যেমন : ① পরিবহণ ব্যবস্থায়: এ যুগের পরিবহণ ব্যবস্থায় খনিজ তেল অপরিহার্য। এরোপ্লেন, মোটরগাড়ি, বাস, ট্রাক, মোটর সাইকেল, রেলইঞ্জিন, জাহাজ প্রভৃতির জ্বালানি হিসেবে; ② কলকারখানায়: মেশিন চালানোর জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল বা গ্যাসোলিন এবং ডিজেল ব্যবহার করা হয়; ③ সামরিক প্রয়োজনে: আধুনিক যুদ্ধে ট্যাংক, যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন, যুদ্ধ বিমান প্রভৃতি চালানোর জন্য খনিজ তেল অপরিহার্য; ④ পিচ্ছিলকারক পদার্থ হিসেবে: খনিজ তেলের উপজাত বিভিন্ন পিচ্ছিলকারক জিনিস (যেমন : মবিল, গ্রিজ প্রভৃতি) পরিবহণ শিল্প এবং যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়; ⑤ ঘরোয়া প্রয়োজনে: কেরোসিন দিয়ে ঘরে লণ্ঠন, স্টোভ প্রভৃতি জ্বালানো হয়। বিদ্যুৎ না-থাকলে ডিজেল, পেট্রোল বা কেরোসিন দিয়ে জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়; ⑥ ন্যাপথা: এটি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

১০. খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্যগুলোর নাম করো।

উত্তর: খনিজ তেল পরিশোধনের বিভিন্ন পর্যায়ে ডিজেল তেল, ভারী ডিজেল তেল, পেট্রোল, গ্যাসোলিন, কেরোসিন, ন্যাপথা, মবিল, গ্রিজ এবং বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া তৈলখনিগুলোতে যে গ্যাস পাওয়া যায় তা রান্না ও বিভিন্ন শিল্পের কাজে ব্যবহার করা হয়।

১১. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির উৎসগুলো কী কী?

উত্তর: প্রচলিত শক্তি: ① কয়লা বা পেট্রোলিয়ামজাত খনিজ তেল পুড়িয়ে উৎপন্ন তাপ বিদ্যুৎ, ② নদীতে বাঁধ দিয়ে জলস্রোত থেকে উৎপন্ন জলবিদ্যুৎ, ③ প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ এবং ④ ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় খনিজ পারমাণবিক পদার্থ থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ শক্তিকে বলা হয় ‘প্রচলিত শক্তি’।

অপ্রচলিত শক্তি: বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের জন্য যে সমস্ত শক্তির ব্যবহার এখনও পর্যন্ত ব্যাপকভাবে প্রচলিত নেই, সেইসব শক্তিকেই সাধারণভাবে বলে অপ্রচলিত শক্তি। সৌরশক্তি (সূর্যকিরণ থেকে প্রাপ্ত তাপ ও বিদ্যুৎ শক্তি), বায়ুশক্তি (হাওয়া কল), ভূগর্ভের তাপশক্তি, জোয়ারভাটার জল ও সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি এবং আবর্জনা, বর্জ্যপদার্থ ও বায়োগ্যাসের মতো জৈবিক শক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ শক্তি বা তাপ শক্তিকে অচিরাচরিত বা অপ্রচলিত শক্তির উৎস বলা যায়।

১২. অপ্রচলিত শক্তির সুবিধাগুলো লেখো।

উত্তর: অপ্রচলিত প্রাকৃতিক শক্তির সুবিধাগুলি হল:

  • দ্রুত হ্রাসমান খনিজ শক্তি-উৎসের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা যুক্তিসংগত নয়। খনিজ শক্তির প্রধান উৎস, যেমন: কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস বা ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম প্রভৃতি ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের জন্য দ্রুত নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে। এইসব দ্রুত হ্রাসমান শক্তি-উৎসের ওপর নির্ভর করা যুক্তিসংগত নয়। এই দিক থেকে খনিজ শক্তি ছাড়া সৌরশক্তি, হাওয়া কল, জলবিদ্যুৎ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির ওপর নির্ভর করা অনেক নিরাপদ, কারণ এদের ফুরিয়ে যাওয়া বা নিঃশেষিত হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
  • অপ্রচলিত শক্তির পরিবেশদূষণ অনেক কম। খনিজ শক্তির প্রধান কাঁচামাল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় অনেক বিষাক্ত পদার্থ নির্গত হয়ে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ে, কিন্তু জলবিদ্যুৎ ও সৌরচুল্লিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষেত্রে পরিবেশদূষণের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
  • অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন ব্যয় অনেক কম। একবার নির্মাণ করা হয়ে গেলে অন্যান্য শক্তির উৎপাদন ব্যয় অনেক কম হয়।
  • অপ্রচলিত শক্তি অনেক সস্তা। উৎপাদন ব্যয় কম বলে অন্যান্য শক্তি খনিজ শক্তির তুলনায় অনেক সস্তা।
  • অপ্রচলিত প্রাকৃতিক শক্তির সুলভতা। দুর্গম অঞ্চল, যেখানে খনিজ শক্তির জোগান নেই বা খনিজ কাঁচামালের পৌঁছোনোর অসুবিধা রয়েছে সেইসব অঞ্চলে অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার (যেমন: সৌরচুল্লি) খুবই উপকারে আসে।
  • বায়ুশক্তি হল পুরণশীল ও প্রবহমান সম্পদ, তাই কয়লা, খনিজ তেল প্রভৃতি গচ্ছিত সম্পদের মতো এই শক্তির নিঃশেষ হওয়ার ভয় নেই।
  • বায়ুশক্তি হল দুষণমুক্ত শক্তিগুলোর অন্যতম।
  • ভূতাপ শক্তি প্রবহমান ও পূরণশীল শক্তি সম্পদ হওয়ায় গচ্ছিত সম্পদের মতো এই শক্তির নিঃশেষ হওয়ার ভয় নেই।
  • ভূতাপ শক্তি দূষণমুক্ত শক্তিগুলোর অন্যতম।

১৩. দক্ষিণ ভারতে জলবিদ্যুৎ সুবিধাগুলো লেখো।

উত্তর: দক্ষিণ ভারতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধাগুলি হল:

  • দাক্ষিণাত্য মালভূমির খাড়া ঢাল এবং নদীর গতিপথে জলপ্রপাতের অবস্থান।
  • অপ্রবেশ্য কঠিন শিলাস্তরে গঠিত দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে জলাধার গড়ে তোলার সুবিধা।
  • প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হার কম।
  • কঠিন শিলাগঠিত দাক্ষিণাত্য মালভূমিতে ভূমিক্ষয়ের স্বল্পতা।
  • এই অঞ্চলে জলবিদ্যুতের ব্যাপক চাহিদা।
  • অন্যান্য শক্তিসম্পদের অভাব : দক্ষিণ ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প উৎস কয়লার অভাব রয়েছে বলে এই অঞ্চলে তাপবিদ্যুতের চেয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সুবিধাজনক।

১৪. ভারতের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর নাম করো।

উত্তর: বর্তমানে ভারতের উল্লেখযোগ্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হল :

(১) কাইগা (কর্ণাটক)
(২) কাকড়াপাড় (গুজরাট)
(৩) কলাপক্কম (তামিলনাডু)
(৪) নারোরা (উত্তরপ্রদেশ)
(৫) রাওয়াত ভাটা (কোটা, রাজস্থান)
(৬) তারাপুর (মহারাষ্ট্র) এবং
(৭) কুদানকুলাম (তামিলনাড়ু)।

১৫. সৌরশক্তির ব্যবহারগুলো লেখো।

উত্তর: বর্তমানে ভারতে সৌরশক্তিকে

① রান্না, ② জল গরম করা, ③ রেফ্রিজারেটর চালানো, ④ ঘর গরম করা, ⑤ ফসল শুকানো প্রভৃতি গার্হস্থ্য কাজে লাগানো হচ্ছে।

বর্তমানে ভারতে বিশেষত সরকারি উদ্যোগে সৌরশক্তি থেকে সরাসরিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন এই বিদ্যুৎকে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল ও দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ① আলো জ্বালানো, ② টিভি সেট চালানো, ③ বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে খাবার জল ও ছোটোখাটো সেচ প্রকল্পের জল তোলা, ④ রেলওয়ে সিগনালিং ও ⑤ রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ির, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ব্যাবসাবাণিজ্য ও রিমোট মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমের কাজে লাগানো হচ্ছে।

১৬. ভূতাপ শক্তির ব্যবহার লেখো।

উত্তর: ভূতাপ শক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা গেলে পৃথিবীতে বর্তমান বিদ্যুৎ সংকটের কিছুটা সমাধান করা যাবে। তবে ভূতাপ শক্তিকে এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়নি, কারণ যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকলে ভূতাপীয় শক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই তার অভাব রয়েছে। ভূতাপ শক্তির সাহায্যে আঞ্চলিকভাবে কোনো ছোটো জায়গার বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যায়।

রচনাধর্মী প্রশ্ন

১. সম্পদের শ্রেণিবিভাগ ও পার্থক্য লেখো।

উত্তর: সম্পদকে বিভিন্ন ভিত্তির ওপর নির্ভর করে শ্রেণিবিভাগ করা যায়:

ক) সম্পদ সৃষ্টির উপাদান অনুসারে:

  • প্রাকৃতিক সম্পদ: যে সম্পদ প্রকৃতি থেকে স্বাভাবিক ভাবে পাওয়া যায়। উদাহরণ: সূর্যকিরণ, মাটি, জল, খনিজ পদার্থ প্রভৃতি।
  • মানবিক সম্পদ: যে সম্পদ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠে। উদাহরণ: জনসংখ্যা, শ্রমশক্তি, কর্মদক্ষতা প্রভৃতি।
  • সাংস্কৃতিক সম্পদ: মানুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, নৈপুণ্য, অনুশাসন, শিক্ষা প্রভৃতির মাধ্যমে যে সম্পদ উদ্ভূত হয়। উদাহরণ: শিক্ষা, শিল্প, প্রযুক্তি, উদ্ভাবনী শক্তি, সংগঠন প্রভৃতি।

খ) সম্পদের স্থায়িত্ব অনুসারে:

  • সঞ্চিত-গচ্ছিত ক্ষয়িষ্ণু-অপুনর্ভব সম্পদ: প্রকৃতিতে যে সম্পদের পরিমাণ সীমাহীন নয় অথবা/যে সম্পদকে ক্রমাগত ব্যবহার করলে শেষ হয়ে যায় কিংবা যে সম্পদকে আবার ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। উদাহরণ: খনিজ তেল, কয়লা, তামা, টিন, সোনা প্রভৃতি সম্পদ।
  • প্রবাহমান/অক্ষয়িষ্ণু/পুনর্ভব সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ বারবার ব্যবহার করা যায় অথবা বারংবার ব্যবহারের ফলেও যে সম্পদ নিঃশেষিত হয় না। উদাহরণ: সূর্যকিরণ, বাতাস, নদী বা সমুদ্রের জল প্রভৃতি।

গ) সম্পদের জৈব বৈশিষ্ট্য অনুসারে:

  • জৈব সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ জীবজগৎ থেকে পাওয়া যায়। উদাহরণ: কাঠ, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, জৈব সার, পশুশক্তি প্রভৃতি।
  • অজৈব সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ প্রাণহীন জড় বস্তু থেকে পাওয়া যায়। উদাহরণ: খনিজ পদার্থ, জল, অক্সিজেন, ইস্পাত প্রভৃতি।

ঘ) সম্পদের অবস্থান অনুসারে:

  • সর্বত্রলভ্য সম্পদ: যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায়। উদাহরণ: বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন, সূর্যকিরণ প্রভৃতি।
  • সহজলভ্য সম্পদ: যেসব সম্পদ পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া না গেলেও বেশিরভাগ স্থানেই পাওয়া যায়। উদাহরণ: কৃষিজমি, জল, মানুষ প্রভৃতি।
  • বিরল বা দুষ্প্রাপ্য সম্পদ: যে সম্পদকে পৃথিবীর মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশেই পাওয়া যায়। উদাহরণ: ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার টিন প্রভৃতি।
  • অদ্বিতীয় সম্পদ: যে সম্পদ অতি বিরল এবং যে সম্পদকে পৃথিবীর একটিমাত্র স্থানেই পাওয়া যায়। উদাহরণ: ক্রায়োলাইট নামক খনিজটি একমাত্র গ্রিনল্যান্ডেই পাওয়া যায়।

ঙ) সম্পদের প্রাপ্তি বা অসমান বণ্টন অনুসারে:

  • আঞ্চলিক সম্পদ: যে সম্পদের অবস্থান নির্দিষ্ট কোনো ভৌগোলিক অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। উদাহরণ: পেট্রোলিয়াম, তামা, সোনা প্রভৃতি।
  • সর্বত্রলভ্য বা সর্বব্যাপ্ত সম্পদ: যে সম্পদের প্রাপ্তি বা জোগান কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। উদাহরণ: বাতাস, জল, সূর্যকিরণ প্রভৃতি।

চ) সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে:

  • ব্যক্তিগত সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ ব্যক্তিমালিকানাধীন অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির অধিকারে রয়েছে। উদাহরণ: কৃষকের জমি, নাগরিকের বাড়ি, গাড়ি, জমি, টাকাপয়সা, ব্যাংক-ব্যালান্স প্রভৃতি।
  • সামাজিক সম্পদ: যে সম্পদ সমাজের অধীন অথবা মানবসমাজের চাহিদা মিটানো ও মঙ্গলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। উদাহরণ: লাইব্রেরি, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল প্রভৃতি।
  • রাষ্ট্রীয় সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ রাষ্ট্রের মালিকানাধীন। উদাহরণ: জাতীয় সড়কপথ, রাজ্য সড়কপথ, রেলপথ, তৈলক্ষেত্র প্রভৃতি।
  • আন্তর্জাতিক সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ সমগ্র বিশ্ববাসীর কল্যাণে নিয়োজিত এবং সারা পৃথিবীর উপকারে আসে। উদাহরণ: কুমেরু মহাদেশ, বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর, আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ প্রভৃতি।

ছ) সম্পদের স্পর্শযোগ্যতা বা বোধগম্যতার ভিত্তিতে:

  • বস্তুগত বা স্পর্শযোগ্য সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ স্পর্শযোগ্য এবং যে সমস্ত সম্পদের অস্তিত্ব আছে। উদাহরণ: খনিজ পদার্থ, জল, বায়ু প্রভৃতি।
  • অবস্তুগত বা অস্পর্শযোগ্য সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদ স্পর্শযোগ্য নয় এবং মানুষের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল থেকে যে সম্পদ আহরণ করা হয়। উদাহরণ: নৈপুণ্য, দক্ষতা, শিক্ষা, নিয়মানুবর্তিতা বিজ্ঞান, আইন, নিরাপত্তা প্রভৃতি।

জ) সম্পদের উদ্ভব বা প্রাপ্তি অনুসারে:

  • প্রাথমিক সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদকে প্রকৃতি থেকে সরাসরি পাওয়া যায়। উদাহরণ: সৌরতাপ, জল, বাতাস প্রভৃতি।
  • বিকশিত সম্পদ: প্রকৃতিদত্ত যে সমস্ত সম্পদকে মানুষের শ্রম ও দক্ষতার সাহায্যে আরও ব্যবহারযোগ্য সম্পদে পরিণত করা যায়। উদাহরণ: অপরিশোধিত খনিজ তেল থেকে আহরণ করা পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, কৃত্রিম তন্তু প্রভৃতি।
  • সম্ভাব্য সম্পদ: যে সমস্ত সম্পদের অস্তিত্ব ও অবস্থান জানা সত্ত্বেও নানান প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণে তাদের পূর্ণ ব্যবহার আজ পর্যন্ত সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। উদাহরণ: আফ্রিকার নানান দেশ, ভারত প্রভৃতি দেশের সম্ভাব্য জলবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ, সম্পদ প্রভৃতি।

গচ্ছিত সম্পদ এবং পুনর্ভব বা অবাধ সম্পদের পার্থক্য:

বিষয়গচ্ছিত সম্পদঅবাধ সম্পদ
১. কাকে বলেযেসব সম্পদের পরিমাণ নির্দিষ্ট এবং ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে যেসব সম্পদ ক্রমশ নিঃশেষিত হয়, সেইসব সম্পদই হল গচ্ছিত সম্পদ।যেসব সম্পদের পরিমাণ অসীম, ক্রমাগত ব্যবহারের ফলেও যা নিঃশেষিত হয় না, সেইসব সম্পদই হল পুনর্ভব সম্পদ।
২. পরিমাণগচ্ছিত সম্পদের পরিমাণ নির্দিষ্ট।অবাধ সম্পদের পরিমাণ অফুরন্ত।
৩. বণ্টনগচ্ছিত সম্পদ পৃথিবীতে অসমানভাবে বণ্টিত অর্থাৎ এদের পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায় না।অবাধ সম্পদ পৃথিবীর সর্বত্র সমানভাবে বণ্টিত হয়েছে, অর্থাৎ এদের সর্বত্র পাওয়া যায়।
৪. ক্ষয়িষ্ণুতাক্রমাগত ব্যবহারের ফলে এই সম্পদ নিঃশেষিত হয়। যেমন ভারতে সোনা, তামা প্রভৃতি সম্পদ প্রায় নিঃশেষিত হয়েছে।বারংবার ব্যবহার করলেও এই ধরনের সম্পদ নিঃশেষিত হয় না। যেমন: সূর্যকিরণ, জলবিদ্যুৎ শক্তি, বায়ুশক্তি প্রভৃতি।
৫. নবীকরণযোগ্যতাগচ্ছিত সম্পদ পুনর্নবীকরণযোগ্য নয়—অর্থাৎ একবার নিঃশেষিত হয়ে গেলে নতুন করে আবার সৃষ্টি হয় না। যেমন : কয়লা, পেট্রোলিয়াম প্রভৃতি।অবাধ সম্পদ পুনর্নবীকরণযোগ্য অর্থাৎ নিঃশেষিত হলেও আবার সৃষ্টি হয়। যেমন : সৌরশক্তি, অরণ্য, নদীর জল প্রভৃতি।
৬. উত্তোলন বা উৎপাদন ব্যয়গচ্ছিত সম্পদের উত্তোলন বা উৎপাদন ব্যয় যথেষ্ট বেশি।অবাধ সম্পদের উৎপাদন ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম।
৭. শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারকাঁচামাল হিসেবে শিল্পক্ষেত্রে গচ্ছিত সম্পদের ব্যবহার বেশি।শিল্পক্ষেত্রে কাঁচামাল হিসেবে অবাধ সম্পদের ব্যবহার কম।
৮. পরিবেশদূষণগচ্ছিত সম্পদের ব্যবহার অনেক সময় পরিবেশদূষণ ঘটায়।অবাধ সম্পদের ব্যবহারে সাধারণত পরিবেশ দূষণ ঘটে না।

২. সম্পদ কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়?

উত্তর: সম্পদ সংরক্ষণের আলাদা আলাদা পদ্ধতি রয়েছে, যেমন:

  • উৎপাদন ও ব্যবহারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা: বিশেষ কোনও সম্পদের ব্যবহারের পরিমাণ যদি তার উৎপাদনের তুলনায় বেশি হয় তখন স্বাভাবিক কারণেই ওই সম্পদ নিঃশেষিত হতে থাকবে। এই কারণে সম্পদের উৎপাদন ও তার ব্যবহারের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়।
  • অপচয় রোধ: নির্দিষ্ট সম্পদের উৎপাদন ও ব্যবহারের সময় যাতে অপচয় না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
  • মিতব্যয়িতা বা ব্যবহারের বাহুল্য হ্রাস: প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ ব্যবহারে সম্পদের পরিমাণ দ্রুত কমে যায়, তাই সম্পদকে পরিকল্পনামাফিক যথাযথভাবে মিতব্যয়িতার সঙ্গে ব্যবহার করলে সম্পদ সংরক্ষণ হতে পারে।
  • অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবহার: যে কাজে যে সম্পদ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী সেই সম্পদকে সেই কাজে ব্যবহার করা উচিত।
  • বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: সম্পদকে সঠিক প্রযুক্তির সাহায্যে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যবহার করে তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা হলে সম্পদের সংরক্ষণও যথাযথভাবে হয়।
  • সম্পদের পুনর্ব্যবহার: উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে একই সম্পদকে বারবার ব্যবহার করলে সম্পদের সাশ্রয় হয়।
  • পরিবর্ত সামগ্রীর ব্যবহার: কোনো একটি দ্রব্যের পরিপূরক হিসেবে অন্য একটি দ্রব্য ব্যবহার করা হলে, সম্পদের সাশ্রয় হয়।
  • সম্পদের পুনঃস্থাপন: প্রবহমান সম্পদের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় তার সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
  • গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু সম্পদের পরিবর্তে প্রবহমান সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি করা: সম্পদ ব্যবহারের সময় গচ্ছিত বা ক্ষয়িষ্ণু সম্পদের পরিবর্তে যতটা পারা যায় প্রবহমান সম্পদ ব্যবহার করা উচিত। এতে গচ্ছিত সম্পদ দীর্ঘকাল সংরক্ষিত থাকবে।

৩. ভারতের কোথায় কোথায় আকরিক লোহা পাওয়া যায়?

উত্তর: ভারতে সঞ্চিত অধিকাংশ লৌহ আকরিকই অতি উচ্চশ্রেণির হেমাটাইট এবং ম্যাগনেটাইট জাতীয় আকরিক লোহা। ভারতে আনুমানিক প্রায় ১,৩০১ কোটি মেট্রিক কোটি টন লৌহ আকরিক সঞ্চিত আছে। লৌহ-আকরিক সঞ্চয়ে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে ওড়িশা প্রথম স্থান, ঝাড়খণ্ড দ্বিতীয় স্থান, ছত্তিশগড় তৃতীয় স্থান, কর্ণাটক চতুর্থ স্থান, গোয়া পঞ্চম স্থান, মহারাষ্ট্র ষষ্ঠ স্থান, মধ্যপ্রদেশ সপ্তম স্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ অষ্টম স্থান এবং রাজস্থান নবম স্থান অধিকার করে।

  • আকরিক লৌহ উৎপাদনে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে ওডিশা প্রথম স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: ময়ূরভঞ্জ জেলার বাদাম পাহাড়, বোনাই, গুরুমহিষানি, সুলাইপাত; কেওনঝাড় জেলার ঠাকুরানি, বোলানি, বাঁশপানি, খুরবাঁধ; সম্বলপুর জেলার বিভিন্ন খনি; সুন্দরগড় জেলার কিরিবুরু এবং কোরাপুট জেলার বিভিন্ন খনি।
  • কর্ণাটক দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: বাবাবুদান পাহাড়ের কেমানমুন্ডি; বেল্লারী জেলার হস্পেট; চিকমাগালুর জেলার কুদরেমুখ; চিত্রদুর্গ; বিজাপুর; ধারওয়ার; টুমকুর এবং উত্তর কানাড়া অঞ্চলের বিভিন্ন খনি।
  • গোয়া তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহ-খনিগুলো হল: সিরিগাঁও; বিচোলেম; তোলসিয়া; পিরণা; সানটোন; মাপুসা; পোন্ডা; বারজান প্রভৃতি।
  • ছত্তিশগড় চতুর্থ স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: দুর্গ অঞ্চলের ডাল্লিরাজহারা; বাস্তার জেলার বাইলাডিলা প্রভৃতি।
  • ঝাড়খণ্ড পঞ্চম স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: সিংভূম জেলার বুদাবুরু, পানশিরাবুরু, মেঘাতুবুরু, রাজোরিবুরু, নুটুবুরু, কোটামাটিবুরু, নোয়ামুন্ডি, চিরিয়া, গুয়া, বড় জামদা প্রভৃতি।
  • মহারাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: রত্নগিরি; চান্দা জেলার, পিপিলগাঁও, লাহার, আকোলা, দেওয়ালগাঁও, গাদচিরোলি, সিন্ধুদুর্গ প্রভৃতি অঞ্চল।
  • মধ্যপ্রদেশের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনি হল: রাওঘাট।
  • অন্ধ্রপ্রদেশের উল্লেখযোগ্য আকরিক লৌহখনিগুলো হল: নেল্লোর; কুডাপ্পা; কুর্নুল; গুন্টুর প্রভৃতি।
  • রাজস্থানে জয়পুর; বুন্দি; ভিলওয়ারা; আলোয়ারে লৌহখনি আছে।
  • তামিলনাড়ুতে সালেম (কোন্না মালাই, গোন্ডামালাই, তীর্থমালাই, কাঞ্চামালাই), তিরুচিরাপল্লি এবং মাদুরাই অঞ্চলে লৌহখনি আছে।
  • এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা (মহেন্দ্রগড়) এবং হিমাচল প্রদেশ (কাংড়া উপত্যকা) রাজ্যে কমবেশি আকরিক লৌহ পাওয়া যায়।

৪. ভারতে রাজ্যভিত্তিক কয়লাখনিগুলোর উল্লেখ করো।

উত্তর: ভারতে প্রধানত গন্ডোয়ানা এবং টার্শিয়ারি যুগের কয়লা সঞ্চিত আছে। গন্ডোয়ানা কয়লা সঞ্চিত আছে ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয়, জম্মু ও কাশ্মীর এবং নাগাল্যান্ডে। টার্শিয়ারি কয়লা পাওয়া যায় প্রধানত গুজরাট, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, কেরল, পুদুচেরী এবং তামিলনাড়ু-তে। সঞ্চিত কয়লার পরিমাণ অনুসারে ভারতীয় রাজ্যগুলির মধ্যে ছত্তিশগড় প্রথম স্থান, ঝাড়খণ্ড দ্বিতীয় স্থান, ওড়িশা তৃতীয় স্থান, মধ্যপ্রদেশ চতুর্থ স্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ পঞ্চম স্থান, মহারাষ্ট্র ষষ্ঠ স্থান, পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম স্থান, উত্তরপ্রদেশ অষ্টম স্থান, মেঘালয় নবম স্থান, আসাম দশম স্থান অধিকার করে।

  • কয়লা উৎপাদনে বর্তমানে ভারতের মধ্যে ছত্তিশগড় প্রথম স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: কোরবা, বিলাসপুর, বেতুল, রায়গড়, ঝিলিমিলি, সিঙ্গারাউলী।
  • ঝাড়খণ্ড দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: ঝরিয়া (ভারতের বৃহত্তম), বোকারো, চন্দ্রপুরা, হুতার, রামগড়, গিরিডি, করণপুরা, ডালটনগঞ্জ।
  • ওড়িশা তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: তালচের, সুন্দরগড়, ঢেনকানাল, সম্বলপুর।
  • মধ্যপ্রদেশ চতুর্থ স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: চিন্দুয়ারা (কানহা ও পেঞ্চ উপত্যকা), রেওয়া, বেতুল।
  • অন্ধ্রপ্রদেশ পঞ্চম স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: শিঙ্গারেনী, কাঠগুদাম, আদিলাবাদ, নেলোর।
  • মহারাষ্ট্র ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: কাম্পতি, বল্লারপুর, ওয়ার্ধা, চন্দা।
  • পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: রানিগঞ্জ, (ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম), আসানসোল, দিশেরগড়, পোনাটি, সান্ডুরিয়া, কাজোরা, লায়েকড়ি।
  • মেঘালয় এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কয়লাখনিগুলো হল: কারাইহাড়ি, ধারানগিরি, চেরাপুঞ্জি, সিজু।
  • ভারতের অন্যান্য কয়লা উৎপাদক রাজ্যগুলো হল: অসম (নাজিয়া ও মাকুম); জম্মু-কাশ্মীর (কালাকোট); রাজস্থান (পালানা); তামিলনাড়ুর (নিয়েভেলি : ভারতের বৃহত্তম লিগনাইট খনি)।

৫. ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের তৈলখনিগুলোর নাম করো।

উত্তর: ভারতের খনিজ তেল উৎপাদক অঞ্চলগুলিকে চারটি প্রধান অঞ্চলে ভাগ করা যায়, যথা : (ক) উত্তর-পূর্ব ভারতের তৈলখনি, (খ) পশ্চিম ভারতের তৈলখনি, (গ) আরব সাগরের দরিয়া অঞ্চলের তৈলখনি এবং (ঘ) দক্ষিণ ভারতের তৈলখনি।

উত্তর-পূর্ব ভারতের তৈলক্ষেত্র:

  • অসম: খনিজ তৈল উৎপাদনে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে অসম তৃতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য তৈলখনিগুলো হল: ডিগবয় (ভারতের প্রাচীনতম তৈলখনি), নাহারকাটিয়া, মোরান, হুগরিজান, রুদ্রসাগর, লাকুয়া, টিয়ক, গেলেকি, অঙ্গুরি, বোরজোলা প্রভৃতি।
  • অরুণাচল প্রদেশ: এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য তৈলখনিগুলো হল: খারসাং ও নিংগারু।
  • নাগাল্যান্ড-অসম সীমান্তবর্তী অঞ্চল (বোরহোল্লা)।

পশ্চিম ভারতের তৈলক্ষেত্র:

  • গুজরাট: খনিজ তৈল উৎপাদনে ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে অসম দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের উল্লেখযোগ্য তৈলখনিগুলো হল: ভারুচ জেলার আঙ্কলেশ্বর, দহেজ, কোসাম্বা; সুরাট জেলার ওলপদ; মহেসানা জেলার মহেসানা, কালোল, কাড়ি; আমেদাবাদ জেলার ধোলকা, সানন্দ প্রভৃতি।

আরব সাগরের দরিয়া অঞ্চলের তৈলক্ষেত্র: খনিজ তেল উৎপাদনে এই অঞ্চল ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে। এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য তৈলখনিগুলো হল: মুম্বাই-এর ১৭৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আরব সাগরের মহীসোপানে প্রায় ২০০০ বর্গকিমি অঞ্চলে বিস্তৃত বোম্বে-হাই হল ভারতের অন্যতম সমুদ্রগর্ভের তৈলখনি, যা ভারতের প্রায় ৫০% খনিজ তেল উৎপাদন করে প্রথম স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া মুম্বাই-এর ৯৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত পান্না এবং ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত মুক্তা তৈলক্ষেত্র দুটি থেকে ONGC, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ব্রিটিশ গ্যাস খনিজ তেল আহরণ করে।

দক্ষিণ ভারতের তৈলক্ষেত্র: দক্ষিণ ভারতের কৃষ্ণা ও গোদাবরী নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের রাজোল, লিনগালা; তামিলনাড়ু রাজ্যের আরিয়াক্কামঙ্গলম, কোভিলাপ্পালা, নরিমানম, ভুবনগিরি। এ ছাড়াও তামিলনাড়ু রাজ্যের উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগরের মহীসোপান অঞ্চলে অবস্থিত কাবেরী বেসিন, KG D-6 ও রাডভা এবং পুদুচেরি শহরের ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মহীসোপান অঞ্চলে অবস্থিত PY-6 তৈলখনি থেকে খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়।

৬. ভারতের উল্লেখযোগ্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর নাম করো।

উত্তর: বর্তমানে ভারতে প্রায় ৯০টি বৃহদায়তন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ভারতের এইসব স্থানে অবস্থিত:

  • (১) পশ্চিমবঙ্গ: ফারাক্কা, দুর্গাপুর, ব্যান্ডেল, কোলাঘাট, সাঁওতালডি, টিটাগড়, বজবজ, মেঝিয়া, বক্রেশ্বর, দিশেরগড় প্রভৃতি।
  • (২) ঝাড়খণ্ড: বোকারো, চন্দ্রপুরা প্রভৃতি।
  • (৩) বিহার: বারাউনি প্রভৃতি।
  • (৪) ওড়িশা: তালচের প্রভৃতি।
  • (৫) অসম: নামরূপ, বঙ্গাইগাঁও প্রভৃতি।
  • (৬) ছত্তিশগড়: কোরবা, অমরকণ্টক প্রভৃতি।
  • (৭) মধ্যপ্রদেশ: সিংগ্রাউলি, সাতপুরা প্রভৃতি।
  • (৮) তামিলনাড়ু: নিয়েভেলি, এনুর, তুতিকোরিন প্রভৃতি।
  • (৯) অন্ধ্রপ্রদেশ: কোটাগুডেম, বিজওয়াড়া, রামাগুনডেম প্রভৃতি।
  • (১০) মহারাষ্ট্র: কোরাডি, চন্দ্রপুর, ট্রম্বে, নাসিক, ভুসওয়াল, পুরলি প্রভৃতি।
  • (১১) গুজরাট: আমেদাবাদ, গান্ধিনগর, সবরমতী প্রভৃতি।
  • (১২) কর্ণাটক: রায়চূড় প্রভৃতি।
  • (১৩) দিল্লি: বদরপুর, ইন্দ্রপ্রস্থ, রাজঘাট প্রভৃতি।
  • (১৪) উত্তরপ্রদেশ: রিহান্দ, হরদুয়ারগঞ্জ, পাঁকি প্রভৃতি।
  • (১৫) জম্মু ও কাশ্মীর: কালাকোট প্রভৃতি।
  • (১৬) হরিয়ানা: ফরিদাবাদ, পানিপথ প্রভৃতি।
  • (১৭) পাঞ্জাব: ভাতিন্দা, রূপনগর প্রভৃতি।
  • (১৮) রাজস্থান: কোটা, পালানা, মাধোপুর প্রভৃতি।

৭. ভারতের প্রধান প্রধান জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর নাম লেখো।

উত্তর: ভারতের উল্লেখযোগ্য জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির নাম:

  • ১. দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন: (১) মাইথন, (২) পাঞ্চেৎ, (৩) তিলাইয়া
  • ২. হিমাচল প্রদেশ: (১) গিরিবাটা, (২) বাশি প্রভৃতি।
  • ৩. জম্মু ও কাশ্মীর: (১) নিম্ন ঝিলাম, (২) সালাল হাইডেল
  • ৪. রাজস্থান: (১) রানাপ্রতাপ সাগর, (২) জহর সাগর
  • ৫. পাঞ্জাব: (১) ভাকরা, (২) নাঙ্গাল প্রভৃতি
  • ৬. উত্তরপ্রদেশ: (১) রিহান্দ, (২) যমুনা প্রভৃতি
  • ৭. গুজরাট: (১) উকাই
  • ৮. মধ্যপ্রদেশ: (১) গান্ধি সাগর
  • ৯. কর্ণাটক: (১) সরাবতী, (২) কলীনদী, (৩) যোগ, (৪) ভদ্রা প্রভৃতি
  • ১০. কেরল: (১) ইডুক্কু, (২) শবরিগিরি, (৩) কাট্টিয়াডি, (৪) শোলায়ার প্রভৃতি
  • ১১. তামিলনাড়ু: (১) কুন্তা, (২) মেতুর, (৩) পেরিয়ার, (৪) কোদায়ার প্রভৃতি।
  • ১২. বিহার: (১) কোশী
  • ১৩. ঝাড়খণ্ড: (১) সুবর্ণরেখা
  • ১৪. ওড়িশা: (১) বালিমেলা, (২) হীরাকুঁদ
  • ১৫. পশ্চিমবঙ্গ: (১) জলঢাকা বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং অন্যান্য জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
  • ১৬. সিকিম: (১) নিম্ন লাগিয়াপ
  • ১৭. মেঘালয়: (১) কর্দমকুলাই
  • ১৮. মণিপুর: (১) লক্টাক্ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

৮. ভারতের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর নাম লেখো।

উত্তর: ভারতের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলো হল:

  • গুজরাট: সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে গুজরাট ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করে। এই রাজ্যের পাঠান জেলায় স্থাপিত চরণকা সোলার পার্কটি হল ভারত তথা এশিয়ার বৃহত্তম সোলার পার্ক। এছাড়া বিট্টা (কচ্ছ), মোসার (পাটনা), মিঠাপুর, সবরকণ্ঠ, রাজকোট, সুরেন্দ্রনগর, গান্ধিনগর, আমেদাবাদ প্রভৃতি অঞ্চল।
  • রাজস্থান: ফালদি, পোখরান, যোধপুর প্রভৃতি অঞ্চল।
  • ওড়িশা: প্রতাপপুর, বোলাঙ্গির প্রভৃতি অঞ্চল।
  • তামিলনাড়ু: সিভাঙ্গা, মেইলাদুথুরাই, কোয়েম্বাটুর, পেরাইয়ুর (মাদুরাই) প্রভৃতি অঞ্চলে।
  • মহারাষ্ট্র: কাটল, ওসমানাবাদ, মুলসি প্রভৃতি অঞ্চলে।
  • হরিয়ানা: গোল পাহাড়, নারনাউল প্রভৃতি অঞ্চল।
  • কর্নাটক: বেলগাঁও, কোলার প্রভৃতি অঞ্চল।
  • পাঞ্জাব
  • অন্ধ্রপ্রদেশ: খাজিরি
  • পশ্চিমবঙ্গ: জামুরিয়া
  • উত্তরপ্রদেশ: বরবাঁকি
  • দিল্লী প্রভৃতি রাজ্যে।

অতিরিক্ত (Extras)

বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQs)

Coming soon

প্রশ্ন ও উত্তর (Questions, Answers)

Coming soon

Ron'e Dutta
Ron'e Dutta
Ron'e Dutta is a journalist, teacher, aspiring novelist, and blogger who manages Online Free Notes. An avid reader of Victorian literature, his favourite book is Wuthering Heights by Emily Brontë. He dreams of travelling the world. You can connect with him on social media. He does personal writing on ronism.

Get notes of other classes and subjects

NBSE SEBA/AHSEC
NCERT TBSE
WBBSE/WHCHSE ICSE/ISC
BSEM/COHSEM MBOSE
Share Feedback Question Papers
Notify change in syllabus/books Share PDFs of books, get benefits
Request notes not available now Share PDFs of question papers

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Only for Registered Users