এখানে (chapter 2) বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ: WBBSE ক্লাস ৯ ইতিহাস (বাংলা মাধ্যম)-এর উত্তর, ব্যাখ্যা, সমাধান, নোট, অতিরিক্ত তথ্য, এমসিকিউ এবং পিডিএফ পাওয়া যাবে। নোটগুলো শুধুমাত্র রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করুন এবং প্রয়োজনমতো পরিবর্তন করতে ভুলবেন না।
Select medium |
English medium notes |
Bengali medium notes |
- সারাংশ (summary)
- পাঠ্য প্রশ্ন ও উত্তর (Santra textbook)
- সঠিক উত্তরটিনির্বাচন করো (MCQ)
- শূন্যস্থান পূরণ করো (fill in the blanks)
- ‘ঠিক’/’ভুল’ নির্বাচন করো (true or false)
- স্তম্ভ মেলাও (match)
- বিবৃতির সঙ্গে মানানসই ব্যাখ্যাটি লেখো
- অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
- সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
- বিশ্লেষণমূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
- ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
- অতিরিক্ত (Extras)
Video tutorial
সারাংশ (summary)
পাঠ্য প্রশ্ন ও উত্তর (Santra textbook)
সঠিক উত্তরটিনির্বাচন করো (MCQ)
১. নেপোলিয়ান ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান
(ক) ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (ক) ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে
২. নেপোলিয়ান নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন
(ক) ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (ক) ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
৩. ‘কোড নেপোলিয়ান’-এ ধারার সংখ্যা ছিল
(ক) ২০০০টি
(খ) ২০০৩টি
(গ) ২০৫০টি
(ঘ) ২২৮৭টি
উত্তর: (ঘ) ২২৮৭টি
৪. ‘কোড নেপোলিয়ান’ ঘোষিত হয় কত খ্রিস্টাব্দে?
(ক) ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (খ) ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে
শূন্যস্থান পূরণ করো (fill in the blanks)
১. _______ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান।
উত্তর: ১৭৯৯
২. ‘কোড নেপোলিয়ান’ _______ টি বিভক্ত ছিল।
উত্তর: তিনটি
৩. __________ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রকে ‘ইতালীয় প্রজাতন্ত্র’ আখ্যা দেন।
উত্তর: ১৮০২
৪. __________ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান জেনোয়া দখল করেন।
উত্তর: ১৮০৭
৫. নেপোলিয়ান রাশিয়া অভিযান করেন __________ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর: ১৮১২
৬. টিলজিটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় __________ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তর: ১৮০৭
৭. ‘কোড নেপোলিয়ান’ __________ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত হয়।
উত্তর: ১৮০৪
‘ঠিক’/’ভুল’ নির্বাচন করো (true or false)
১. ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে নতুন সংবিধান অনুসারে পাঁচজন ডাইরেক্টর ও দুই কক্ষযুক্ত আইনসভার হাতে দেশের শাসন পরিচালনা ও আইন প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
উত্তর: ভুল
কারণ: ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে নতুন সংবিধান অনুসারে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল, ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দে নয়।
২. ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান।
উত্তর: ঠিক
কারণ: ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ডাইরেক্টরির শাসন শেষ করেন এবং কনসুলেট শাসনব্যবস্থার সূচনা করেন।
৩. ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দের টিলজিটের সন্ধি দ্বারা রুশ-ফরাসি মৈত্রী স্থাপিত হয়।
উত্তর: ভুল
কারণ: টিলজিটের সন্ধি ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা রুশ-ফরাসি মৈত্রী স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান গ্র্যান্ড আর্মি নিয়ে মস্কো অভিযান করেন।
উত্তর: ভুল
কারণ: নেপোলিয়ান ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে মস্কো অভিযান পরিচালনা করেন, ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে নয়।
৫. নেপোলিয়ানকে বিপ্লবের সন্তান ও ধ্বংসকারী বলা হয়।
উত্তর: ঠিক
কারণ: নেপোলিয়ান বিপ্লবের আদর্শ প্রচার করলেও তাঁর স্বৈরাচারী ও সাম্রাজ্যবাদী নীতির কারণে বিপ্লবের কিছু মূল্যবোধ ক্ষুণ্ন হয়েছিল। এজন্য তাঁকে বিপ্লবের সন্তান ও ধ্বংসকারী উভয়ই বলা হয়।
স্তম্ভ মেলাও (match)
1.
ক’-স্তম্ভ | ‘খ’-স্তম্ভ | মিল |
---|---|---|
(a) ট্রাফালগারের যুদ্ধ | (i) 1806 খ্রিস্টাব্দ | a → ii |
(b) পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অবসান | (ii) 1805 খ্রিস্টাব্দ | b → i |
(c) ফন্টেন ব্লু | (iii) 1814 খ্রিস্টাব্দ | c → iii |
(d) পেনিনসুলার যুদ্ধ | (iv) 1807 খ্রিস্টাব্দ | d → iv |
2.
ক’-স্তম্ভ | ‘খ’-স্তম্ভ | মিল |
---|---|---|
(a) গৃহ যুদ্ধনীতি | (i) গ্র্যান্ড আর্মি | a → iv |
(b) ফরাসি বাহিনী | (ii) লিপজিগের যুদ্ধ | b → iii |
(c) জাতিসমূহের যুদ্ধ | (iii) গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ | c → ii |
(d) প্রাশিয়াভুক্ত পোল্যান্ড | (iv) পোড়ামাটি নীতি | d → i |
অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
১. নেপোলিয়ান কত খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সম্রাট হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেন?
উত্তর: ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে।
২. ‘কোড নেপোলিয়ান’ কত খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত হয়?
উত্তর: ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে।
৩. ‘কোড নেপোলিয়ানে’ ধারার সংখ্যা ক-টি?
উত্তর: ২২৮৭টি।
৪. কত খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ান পোপের রাজ্য দখল করেন?
উত্তর: ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে।
৫. কোড নেপোলিয়ানের দুটি নীতি লেখো।
উত্তর: ১. আইনের চোখে সকল ব্যক্তির সমানাধিকার।
২. সম্পত্তির অধিকার।
৬. শত দিবসের রাজত্ব কী?
উত্তর: ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে এলবা দ্বীপ থেকে ফিরে এসে নেপোলিয়ান প্রায় একশো দিন ফ্রান্স শাসন করেন। এই সময়কালকে শত দিবসের রাজত্ব বলা হয়।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
১. ‘কোড নেপোলিয়ান’ কী?
উত্তর: ‘কোড নেপোলিয়ান’ হল ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্ট কর্তৃক প্রবর্তিত আইন-সংহিতা। এতে সামাজিক সাম্য, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ, সম্পত্তির অধিকার ও সামন্ততন্ত্রের বিলোপসহ বহু গণতান্ত্রিক নীতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি ইউরোপীয় আইন ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলে।
২. নেপোলিয়ান ইউরোপের কোন্ কোন্ রাষ্ট্র দখল করেন?
উত্তর: নেপোলিয়ান ইউরোপে বিভিন্ন রাষ্ট্র দখল করেন, যার মধ্যে রয়েছে ইতালি, স্পেন, প্রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, হল্যান্ড এবং বেলজিয়াম। এছাড়া তিনি জার্মানির রাইন কনফেডারেশন গঠন করেন এবং পোল্যান্ডে গ্র্যান্ড ডাচি অফ ওয়ারশ প্রতিষ্ঠা করেন।
৩. নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে কোন্ কোন্ স্থানে জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া দেখা যায়?
উত্তর: নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া দেখা যায় জার্মানি, স্পেন এবং রাশিয়ায়। জার্মান দার্শনিক ও সংস্কারকরা তাঁর শাসনের বিরোধিতা করেন। স্পেনে চোরাগোপ্তা যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। রাশিয়ায় ‘পোড়ামাটি নীতি’ এবং শীতল আবহাওয়া তাঁর সেনাবাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত করে।
৪. নেপোলিয়ানকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় কেন?
উত্তর: নেপোলিয়ানকে ‘বিপ্লবের সন্তান’ বলা হয় কারণ তিনি ফরাসি বিপ্লবের সাম্যের আদর্শকে সমর্থন করেন এবং তাঁর শাসন ব্যবস্থায় বিপ্লবের অনেক গণতান্ত্রিক নীতি বাস্তবায়ন করেন। তবে, তাঁর শাসনকালে স্বৈরাচারী শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটে, যা বিপ্লবের আদর্শের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করেছিল।
৫. রাইন কনফেডারেশন কী?
উত্তর: রাইন কনফেডারেশন ছিল নেপোলিয়ানের উদ্যোগে ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে গঠিত জার্মানির ১৬টি রাজ্যের একটি সংঘ। এটি পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অবসান ঘটিয়ে নেপোলিয়ানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
বিশ্লেষণমূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
১. নেপোলিয়ান কীভাবে ক্ষমতা দখল করেন?
উত্তর: সন্ত্রাসের শাসনের অবসানের পর ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসন শুরু হয়। ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে নতুন সংবিধান অনুসারে পাঁচজন ডাইরেক্টর ও দুই কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার হাতে দেশের শাসন ও আইন প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পিত হয়। কিন্তু ডাইরেক্টরির শাসনকাল ফ্রান্সের ইতিহাসে চূড়ান্ত ব্যর্থতার যুগ হিসেবে চিহ্নিত হয়। অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক সংকটের মুখে ফ্রান্সে বিপ্লবী আদর্শ কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। এ পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ান বোনাপার্ট একজন দক্ষ সামরিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে তুলোঁ বন্দরের অবরোধমুক্তির পুরস্কারস্বরূপ তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন। পরে ন্যাশনাল কনভেনশনকে রক্ষা করে মেজর জেনারেল পদ লাভ করেন। ডাইরেক্টরির শাসনকালে তিনি বৈদেশিক যুদ্ধে সাফল্য অর্জন করেন এবং ফ্রান্সের জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর, ডাইরেক্টরির দুই সদস্য অ্যাবে সিয়েস ও ব্যারাসের সহযোগিতায় নেপোলিয়ান এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান। এরপর তাঁর নেতৃত্বে কনসুলেট নামক নতুন শাসনব্যবস্থা গৃহীত হয়। প্রথম কনসাল হিসেবে তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্জন করেন। ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গণভোটের মাধ্যমে নিজেকে ফরাসি জাতির সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন। এর ফলে ফ্রান্সে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শুরু হয় নেপোলিয়ানের যুগ।
২. নেপোলিয়ান কর্তৃক প্রবর্তিত ‘কোড নেপোলিয়ান’-এর গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: কোড নেপোলিয়ান নেপোলিয়ানের শাসনব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ছিল। বিপ্লব-পরবর্তী ফ্রান্সে কোনো সাধারণ আইন ছিল না। সমগ্র দেশে প্রায় চারশোটি আইনবিধি প্রচলিত ছিল। ফ্রান্সের উত্তরাংশব্যাপী প্রথাগত আইন এবং দক্ষিণাংশব্যাপী রোমান আইন প্রচলিত ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রদেশে রাজকীয়, যাজকীয় ও সামন্ত আইন প্রচলিত ছিল। নেপোলিয়ান এই জটিলতার অবসান ঘটিয়ে সমগ্র দেশে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইন প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। চার বছরব্যাপী প্রায় ৪৪টি অধিবেশনে আলোচনার পর ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে আইন-সংহিতা সংকলিত হয়। যা ‘কোড নেপোলিয়ান’ নামে খ্যাত।
কোড নেপোলিয়ানে মোট ২২৮৭টি ধারা ছিল। এর তিনটি অংশ ছিল— দেওয়ানি কোড, ফৌজদারি কোড এবং বাণিজ্যিক কোড। দেওয়ানি আইনগুলিতে আইনের চোখে সকল ব্যক্তির সমানাধিকার, সামাজিক সাম্য, যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে সুযোগ, সম্পত্তির অধিকার, সামন্ততন্ত্রের বিলোপ প্রভৃতি বিষয়গুলি রাখা হয়। এ ছাড়া বিচারব্যবস্থায় জুরি প্রথা প্রবর্তিত হয়। ফৌজদারি আইনবিধিগুলিকে যুক্তিবাদ ও প্রাকৃতিক আইনের আলোকে রচনা করা হয়। বর্বরোচিত শাস্তিদান পদ্ধতি রদ এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। বাণিজ্যবিষয়ক অনেকগুলি আইনও সংকলিত হয়।
কোড নেপোলিয়ানের মাধ্যমে নেপোলিয়ান বিপ্লবের মুখ্য ফসলগুলি যেমন- আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, উত্তরাধিকার ক্ষেত্রে সমানাধিকার, সামন্ততান্ত্রিক বিশেষ সুবিধার উচ্ছেদ, প্রতিভার স্বাভাবিক স্ফুরণের সুযোগ প্রভৃতি সুসংবদ্ধ রূপ দেন। তথাপি অনেকে মনে করেন এই আইনবিধির দ্বারা পুরাতনতন্ত্রের যুগের রোমান আইনের ন্যায় আইন চালু হওয়ায় সমাজে স্থিতি আসলেও এর ফলে প্রগতিশীল পরিবর্তনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
এই আইনবিধি ফ্রান্সের সীমা ছাড়িয়ে ইউরোপে স্বীকৃতি পায়। বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে এই আইনবিধি এখনও প্রচলিত আছে। এই আইনবিধির জন্য নেপোলিয়ানকে ‘দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান’ বলে অভিহিত করা হয়।
৩. নেপোলিয়ানের ক্ষমতায় উত্তরণ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
উত্তর: নেপোলিয়ানের ক্ষমতায় উত্তরণ ছিল এক বিস্ময়কর এবং অবিশ্বাস্য কাহিনি। ডাইরেক্টরির শাসনকালে ফ্রান্স অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় ক্ষেত্রেই সংকটের মধ্যে পড়ে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, সার্ডিনিয়া ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। নেপোলিয়ান এই শক্তিজোটের বিরুদ্ধে একজন সমরনেতা হিসেবে অভূতপূর্ব সফলতা দেখান। তিনি ইটালিকে পরাজিত করে পার্মা, মডেনা ও নেপলস এবং অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে মিলান দখল করেন। অতঃপর পোপের রাজ্য আক্রমণ করলে পোপ ষষ্ঠ পায়াস ও নেপোলিয়ানের মধ্যে টলেন্টিনোর সন্ধি (১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৭৯৭) স্বাক্ষরিত হয়। অস্ট্রিয়ার সঙ্গে মিলানের যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ক্যাম্পোফর্মিয়োর সন্ধি (১৭ অক্টোবর, ১৭৯৭) স্বাক্ষরিত হয়, যার শর্তানুসারে ফ্রান্সের সীমা ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়।
এই সাফল্যের ফলে ইউরোপে নেপোলিয়ানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এরপর তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মিশর অভিযানে যান এবং পিরামিডের যুদ্ধে সাফল্য লাভ করলেও নীলনদের যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাপতি নেলশনের কাছে পরাজিত হন। এসময় ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির অপশাসনে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। নেপোলিয়ানের জনপ্রিয়তা ক্রমে বৃদ্ধি পায়। ১৭৯৯ সালের ৯ নভেম্বর অ্যাবে সিয়েস ও ব্যারাসের সহায়তায় এক সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নেপোলিয়ান ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান। অতঃপর তিনি ফ্রান্সের প্রধান কনসাল হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ১৮০৪ সালে তিনি গণভোটের মাধ্যমে নিজেকে ফরাসি জাতির সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন। এইভাবে ইউরোপে শুরু হয় নেপোলিয়ানের যুগ।
৪. নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে সংঘঠিত জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: জাতীয়তাবাদের এমন কোনো সংজ্ঞা নেই, যা সবাই মেনে নেবেন। তবে মোটামুটি বলা যায়, মানুষ যখন তার দেশ আর দেশের মানুষের সঙ্গে এমন একাত্মবোধ করে, যে বোধ তার ধর্মীয় এবং অন্য সমষ্টিগত চেতনাকে ছাপিয়ে যায় তখন তার বোধকে আমরা জাতীয়তাবাদ বলতে পারি। ফরাসি বিপ্লব নানাভাবে ফ্রান্সে এই চেতনার জন্ম দিয়েছিল। আর নেপোলিয়ান যখন প্রাশিয়া বা ইটালিতে ফরাসি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন তখন সেই অঞ্চলগুলিতেও পরোক্ষভাবে জাতীয় চেতনা গড়ে ওঠে। তবে নেপোলিয়ানের বিরোধী প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ইউরোপে এই চেতনার বিকাশ ঘটেছে।
- জার্মানিতে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ান রাইন নদীর পূর্বতীরের রাজ্যগুলি দখল করে নিয়েছিলেন। গোটা জার্মানিতে প্রাশিয়া আর অস্ট্রিয়া ছাড়া অন্য সব ক-টি রাজ্যই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে। কিন্তু নেপোলিয়ানের কাছে পরাজয় জার্মান দার্শনিকদের মধ্যে এবং শিক্ষিত সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। প্রথম দিকে জার্মান দার্শনিক ও সাহিত্যিক গ্যোটের মতো কেউ কেউ নেপোলিয়ানের প্রশংসা করেছেন। তাঁকে ইউরোপের মুক্তিদাতা মনে করা হয়েছে। কিন্তু, পরে দেখা যায় অন্যান্য স্বৈরাচারী শাসকের মতো তিনিও ক্ষমতালোভী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বংশগৌরবে বিশ্বাসী। এই সময় থেকেই জার্মানিতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত ঘটে। প্রাশিয়ার স্বদেশপ্রেমী হামবোল্ট, হিন্ডেনবার্গ, স্টাইন, শার্নহর্স্ট প্রমুখ শিক্ষাসংস্কারের মাধ্যমে যুবসম্প্রদায়কে নেপোলিয়ানের শাসননীতির কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন। ফলে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্ররা বিপুল সংখ্যায় নেপোলিয়ান বিরোধী মুক্তিসংগ্রামে যোগ দেয়।
- আইবেরীয় উপদ্বীপে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল স্পেনে। নেপোলিয়ান এখানে রাজা চতুর্থ চার্লস আর তাঁর ছেলে সপ্তম ফার্দিনান্দকে সিংহাসনের দাবি ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। রাজপদে বসান নিজের ভাই জোসেফ বোনাপার্টকে। এখানেও নেপোলিয়ান ফ্রান্স এবং ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সংস্কার চালু করে গণসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন। তবে তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়নি। স্পেনীয় জনতা তাদের সীমিত সাধ্য নিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা বা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ফরাসি বাহিনীকে বিব্রত করতে থাকে। স্পেনে একাধিক ‘জুন্টা’ বা বিদ্রোহী প্রতিরোধ সমিতি গড়ে ওঠে। নেপোলিয়ান নিজে উপস্থিত থেকেও আইবেরীয় উপদ্বীপকে দখলে আনতে পারেননি। স্পেনীয় জনতার বিদ্রোহের চাপে জোসেফ বোনাপার্ট মাত্র এগারো দিনের মধ্যে রাজধানী মাদ্রিদ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। শেষপর্যন্ত বেলেন, ভিমেয়রা, স্যালামাঙ্কার, ভিট্টোরিয়া প্রভৃতি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ফরাসি বাহিনী স্পেন ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
অনেকে বলেন, স্পেনের প্রতিরোধ জাতীয়তাবাদী প্রতিরোধ নয়। স্পেনীয় কৃষক তাদের অভিজাত নেতাদের অধীনে থেকে পুরোনো ব্যবস্থাকে ধরে রাখার জন্যই নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। কারণ যাই হোক, বিদেশি বোনাপার্টের বিরুদ্ধে স্পেনীয় মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য।
- ফ্রান্সে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ান যতদিন ফরাসিবাসীকে যুদ্ধজয়ের গৌরব এনে দিয়েছেন, ফ্রান্স তাঁকে সমর্থন করেছে। কিন্তু পরবর্তীকালে নেপোলিয়ানের একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা, বাক্স্বাধীনতা হরণ, গুপ্তচর নিয়োগ প্রভৃতি কারণে ফরাসি জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হতে থাকে। মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ব্যর্থতা ফ্রান্সের মানুষদের মধ্যে নেপোলিয়ান বিরোধী প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। ইংল্যান্ডের জাহাজ ফরাসি উপকূলে না আসার ফলে বিস্তীর্ণ ইউরোপের বহু অঞ্চলের মতো ফরাসি কিছু শহরেও কারখানার উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বেকারত্ব বাড়ে। এরপর আইবেরীয় উপদ্বীপের যুদ্ধে বিপর্যয়ের পর নতুন সামরিক অভিযানগুলির জন্য নেপোলিয়ানের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। ফরাসি মানুষের ওপরও করের চাপ বাড়ে। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। তা ছাড়া একসময়ে বিপ্লবী আদর্শের বাহক নেপোলিয়ান যখন তাঁর সাম্রাজ্যবাদী রাজতন্ত্রী রূপটা প্রকাশ করেন তখন জাতীয়তাবাদী, বিপ্লবী ফ্রান্স তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
৫. নেপোলিয়ানের মস্কো অভিযানের ফল কী হয়েছিল?
উত্তর: নেপোলিয়নীয় যুদ্ধে জয়পরাজয় সুনিশ্চিতভাবে নির্ধারিত হয়েছিল রাশিয়ায়। নেপোলিয়নীয় বাহিনীর সর্বাত্মক বিনাশ ঘটেছিল রাশিয়ায়। আড়াই লক্ষ সৈন্য নিহত হয়েছিল এবং বন্দি হয়েছিল এক লক্ষ। রাশিয়া থেকে যে পশ্চাদপসরণ শুরু হয় তা নেপোলিয়ানের রাজনৈতিক ভাগ্যনির্ধারণ করে দেয়। রুশ সেনাপতি কুটুজেভের নেতৃত্বে রুশ গেরিলা বাহিনীর আক্রমণের মুখে ফরাসি সৈন্যবাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রুশ সেনাবাহিনী কর্তৃক গৃহীত ‘পোড়ামাটি নীতি’ এবং মস্কোর তীব্র শীত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে নেপোলিয়ানের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। ফলত, নেপোলিয়ান পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হন।
৬. নেপোলিয়ানের সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবের আদর্শের কীরূপ সংঘাত দেখা দেয়?
উত্তর: ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ ছিল সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা। এই বিপ্লব সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন এনেছিল। সামাজিক ক্ষেত্রে বিপ্লবের লক্ষ্য ছিল সাম্য প্রতিষ্ঠা। প্রথম দুই সম্প্রদায়ের (যাজক ও অভিজাত) বিশেষ অধিকারের বিলোপসাধন করেছে এই বিপ্লব। বংশগৌরবকে অগ্রাহ্য করে, যোগ্যতা ও দক্ষতাকেই পদলাভের একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিল বিপ্লবী সংবিধান সভা।
অন্যদিকে এই বিপ্লবের ফলে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রাজার একচ্ছত্র স্বৈরাচারী ক্ষমতার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে শাসনভার ন্যস্ত হয়। নেপোলিয়ান শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শকে গ্রহণ করলেও স্বাধীনতার আদর্শকে মেনে নেননি। প্রথম কনসাল হিসেবে সকল ক্ষমতা নিজের হাতে কৈন্দ্রীভূত রেখে তিনি গণতন্ত্রকে অস্বীকার করেন। অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও প্রাশিয়াকে পরাজিত করে বিশাল সাম্রাজ্য গঠন করেন। ফলে ফরাসি বিপ্লবের যেসকল আদর্শকে কেন্দ্র করে তিনি ক্ষমতায় উত্তরণ ঘটান, তাঁর সাম্রাজ্যিক কার্যকলাপ সেইসকল আদর্শের সঙ্গেই বিরোধ সৃষ্টি করেছিল।
রাজনৈতিকভাবে তিনি ক্রমশ স্বৈরাচারী বুরবোঁ রাজাদেরই উত্তরাধিকারী হয়ে ওঠেন। মানুষের ভোটে নির্বাচিত সংস্থাগুলির ওপর ভরসা না করে, তিনি রাজকর্মচারীদের মাধ্যমেই শাসন চালাতে থাকেন। প্রিফেক্ট এবং সাবপ্রিফেক্ট নামে পরিচিত এই রাজকর্মচারীরা ছিলেন নেপোলিয়ানেরই অনুগত। এইভাবে তিনি শাসনব্যবস্থায় বিপ্লবী আমলের বিকেন্দ্রীকরণের পরিবর্তে বুরবোঁ আমলের কেন্দ্রীকরণের নীতিকেই ফিরিয়ে আনেন।
ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি
১. ‘কোড নেপোলিয়ান’ কী? ‘কোড নেপোলিয়ান’ ইউরোপের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তর: কোড নেপোলিয়ান: নেপোলিয়ানের মধ্যে সামরিক প্রতিভা ও সুশাসকের বাস্তববোধের সংমিশ্রণ ঘটেছিল। প্রথম কনসালরূপে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের কাজে হাত দেন। তাঁর অন্যতম সংস্কারমূলক কাজের দৃষ্টান্ত ছিল কোড নেপোলিয়ান প্রবর্তন। বিপ্লবের পরবর্তীতে ফ্রান্সে কোনো সাধারণ আইন ছিল না। সমগ্র দেশে প্রায় চারশোটি আইনবিধি প্রচলিত ছিল। ফ্রান্সের উত্তরাংশব্যাপী প্রথাগত আইন এবং দক্ষিণাংশব্যাপী রোমান আইন প্রচলিত ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রদেশে রাজকীয়, যাজকীয় ও সামন্ত আইন প্রচলিত ছিল। নেপোলিয়ান এই জটিলতার অবসান ঘটিয়ে সমগ্র দেশে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইন প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। চার বছরব্যাপী প্রায় ৪৪টি অধিবেশনে আলোচনার পর ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে আইন-সংহিতা সংকলিত হয়। যা ‘কোড নেপোলিয়ান’ নামে খ্যাত। নেপোলিয়ান মূলত বিপ্লবের মূল আদর্শ সামাজিক সাম্যকে স্বীকার করে নতুন আইনগুলি সংকলন করেন। কোড নেপোলিয়ানে মোট ২২৮৭টি ধারা ছিল। এর তিনটি অংশ ছিল—দেওয়ানি কোড, ফৌজদারি কোড এবং বাণিজ্যিক কোড।
ইউরোপের রাজনীতিতে প্রভাব:
- কোড নেপোলিয়ানের মাধ্যমে আইনের চোখে সকল ব্যক্তির সমানাধিকার, সামাজিক সাম্য, যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে সুযোগ, সম্পত্তির অধিকার ও সামন্ততন্ত্রের বিলোপ প্রভৃতি বিষয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
- বিচারব্যবস্থায় জুরি প্রথা প্রবর্তিত হয়।
- ফৌজদারি আইনবিধিগুলিকে যুক্তিবাদ ও প্রাকৃতিক আইনের আলোকে রচনা করা হয়।
- বর্বরোচিত শাস্তিদান পদ্ধতি রদ এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
- কোড নেপোলিয়ান ফ্রান্সের সীমা ছাড়িয়ে ইউরোপে স্বীকৃতি পায়। বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে এই আইনবিধি এখনও প্রচলিত।
- কোড নেপোলিয়ানের জন্য নেপোলিয়ানকে ‘দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান’ বলে অভিহিত করা হয়।
২. নেপোলিয়ানের গ্র্যান্ড আর্মি কোথায় চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়? নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে যে জাতীয়তাবাদী প্রতিরোধ দেখা গিয়েছিল তা আলোচনা করো।
উত্তর: নেপোলিয়ানের গ্র্যান্ড আর্মি রাশিয়ার মস্কো অভিযানে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। রাশিয়া আক্রমণে নেপোলিয়ান রুশ সেনাবাহিনীর পোড়ামাটি নীতির মুখোমুখি হন। মস্কোর তীব্র শীত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এবং রুশ গেরিলা বাহিনীর আক্রমণের ফলে তাঁর পরাজয় ঘটে এবং পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হন।
নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী প্রতিরোধ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়।
- জার্মানিতে প্রতিক্রিয়া: রাইন নদীর পূর্বতীরের রাজ্যগুলি দখল করার পর জার্মান দার্শনিক ও শিক্ষিত সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। হামবোল্ট, হিন্ডেনবার্গ, স্টাইন, শার্নহর্স্ট প্রমুখ শিক্ষাসংস্কারের মাধ্যমে যুবসম্প্রদায়কে নেপোলিয়ানের শাসনের কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্ররা বিপুল সংখ্যায় মুক্তিসংগ্রামে যোগ দেয়।
- আইবেরীয় উপদ্বীপে প্রতিক্রিয়া: স্পেনে নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ দেখা যায়। তিনি রাজা চতুর্থ চার্লস ও সপ্তম ফার্দিনান্দকে সিংহাসনের দাবি ত্যাগ করিয়ে নিজের ভাই জোসেফ বোনাপার্টকে বসান। স্পেনীয় জনতা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। নেপোলিয়ান নিজে উপস্থিত থেকেও স্পেন দখলে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে ফরাসি বাহিনী স্পেন ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
- ফ্রান্সে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ানের একনায়কতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা হরণ, এবং মহাদেশীয় অবরোধের ব্যর্থতা ফরাসি জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং করের চাপ বৃদ্ধির কারণে মানুষ নেপোলিয়ানের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
- রাশিয়ায় প্রতিক্রিয়া: রাশিয়ার মস্কো অভিযানে নেপোলিয়ানের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রুশ গেরিলা আক্রমণে তাঁর বাহিনী বিপর্যস্ত হয়। এটি তাঁর সাম্রাজ্যের পতনের সূচনা করে।
৩. ফরাসি বিপ্লবের তিনটি আদর্শ কী? নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যের সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ?
উত্তর: ফরাসি বিপ্লবের তিনটি আদর্শ হলো:
- সাম্য
- মৈত্রী
- স্বাধীনতা
নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যের সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবের আদর্শের সামঞ্জস্যের বিষয়ে বলা যায়:
নেপোলিয়ন শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শকে গ্রহণ করলেও স্বাধীনতার আদর্শকে মেনে নেননি। তিনি সকল ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভূত রেখে গণতন্ত্রকে অস্বীকার করেন। অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও প্রাশিয়াকে পরাজিত করে বিশাল সাম্রাজ্য গঠন করেন। ফলে ফরাসি বিপ্লবের যেসব আদর্শকে কেন্দ্র করে তিনি ক্ষমতায় উত্তরণ ঘটান, তাঁর সাম্রাজ্যিক কার্যকলাপ সেই আদর্শের সঙ্গেই বিরোধ সৃষ্টি করেছিল। রাজনৈতিকভাবে তিনি ক্রমশ স্বৈরাচারী বুরবোঁ রাজাদেরই উত্তরাধিকারী হয়ে ওঠেন। মানুষের ভোটে নির্বাচিত সংস্থাগুলির ওপর ভরসা না করে, তিনি রাজকর্মচারীদের মাধ্যমে শাসন চালাতে থাকেন। প্রিফেক্ট এবং সাবপ্রিফেক্ট নামে পরিচিত এই রাজকর্মচারীরা ছিলেন নেপোলিয়ানের অনুগত। এইভাবে তিনি শাসনব্যবস্থায় বিপ্লবী আমলের বিকেন্দ্রীকরণের পরিবর্তে বুরবোঁ আমলের কেন্দ্রীকরণের নীতিকেই ফিরিয়ে আনেন।
তবে সাম্রাজ্যিক কার্যকলাপের মাধ্যমে তিনি সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শকে প্রসারিত করেন। তাঁর প্রবর্তিত কোড নেপোলিয়ানের মাধ্যমে সাম্যের বাণী ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বিপ্লবের বাণী ছড়িয়ে দিয়ে তিনি কার্যত ফরাসি বিপ্লবকে ইউরোপীয় বিপ্লবে রূপান্তরিত করেছিলেন। তবে স্বাধীনতার আদর্শ তাঁর শাসনে উপেক্ষিত ছিল। তাঁর একনায়কতন্ত্র এবং সাম্রাজ্যবাদ ফরাসি বিপ্লবের মৌলিক আদর্শের সঙ্গে একটি বড় বিরোধ সৃষ্টি করে।
৪. নেপোলিয়ানের সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়াগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: জাতীয়তাবাদের এমন কোনো সংজ্ঞা নেই, যা সবাই মেনে নেবেন। তবে মোটামুটি বলা যায়, মানুষ যখন তার দেশ আর দেশের মানুষের সঙ্গে এমন একাত্মবোধ করে, যে বোধ তার ধর্মীয় এবং অন্য সমষ্টিগত চেতনাকে ছাপিয়ে যায় তখন তার বোধকে আমরা জাতীয়তাবাদ বলতে পারি। ফরাসি বিপ্লব নানাভাবে ফ্রান্সে এই চেতনার জন্ম দিয়েছিল। আর নেপোলিয়ান যখন প্রাশিয়া বা ইটালিতে ফরাসি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন তখন সেই অঞ্চলগুলিতেও পরোক্ষভাবে জাতীয় চেতনা গড়ে ওঠে। তবে নেপোলিয়ানের বিরোধী প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ইউরোপে এই চেতনার বিকাশ ঘটেছে।
জার্মানিতে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ান রাইন নদীর পূর্বতীরের রাজ্যগুলি দখল করে নিয়েছিলেন। গোটা জার্মানিতে প্রাশিয়া আর অস্ট্রিয়া ছাড়া অন্য সব ক-টি রাজ্যই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে। কিন্তু নেপোলিয়ানের কাছে পরাজয় জার্মান দার্শনিকদের মধ্যে এবং শিক্ষিত সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। প্রথম দিকে জার্মান দার্শনিক ও সাহিত্যিক গ্যোটের মতো কেউ কেউ নেপোলিয়ানের প্রশংসা করেছেন। তাঁকে ইউরোপের মুক্তিদাতা মনে করা হয়েছে। কিন্তু, পরে দেখা যায় অন্যান্য স্বৈরাচারী শাসকের মতো তিনিও ক্ষমতালোভী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বংশগৌরবে বিশ্বাসী। এই সময় থেকেই জার্মানিতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত ঘটে। প্রাশিয়ার স্বদেশপ্রেমী হামবোল্ট, হিন্ডেনবার্গ, স্টাইন, শার্নহর্স্ট প্রমুখ শিক্ষাসংস্কারের মাধ্যমে যুবসম্প্রদায়কে নেপোলিয়ানের শাসননীতির কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন। ফলে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্ররা বিপুল সংখ্যায় নেপোলিয়ান বিরোধী মুক্তিসংগ্রামে যোগ দেয়।
আইবেরীয় উপদ্বীপে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল স্পেনে। নেপোলিয়ান এখানে রাজা চতুর্থ চার্লস আর তাঁর ছেলে সপ্তম ফার্দিনান্দকে সিংহাসনের দাবি ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। রাজপদে বসান নিজের ভাই জোসেফ বোনাপার্টকে। এখানেও নেপোলিয়ান ফ্রান্স এবং ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সংস্কার চালু করে গণসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন। তবে তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়নি। স্পেনীয় জনতা তাদের সীমিত সাধ্য নিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা বা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ফরাসি বাহিনীকে বিব্রত করতে থাকে। স্পেনে একাধিক ‘জুন্টা’ বা বিদ্রোহী প্রতিরোধ সমিতি গড়ে ওঠে। নেপোলিয়ান নিজে উপস্থিত থেকেও আইবেরীয় উপদ্বীপকে দখলে আনতে পারেননি। স্পেনীয় জনতার বিদ্রোহের চাপে জোসেফ বোনাপার্ট মাত্র এগারো দিনের মধ্যে রাজধানী মাদ্রিদ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। শেষপর্যন্ত বেলেন, ভিমেয়রা, স্যালামাঙ্কার, ভিট্টোরিয়া প্রভৃতি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ফরাসি বাহিনী স্পেন ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
অনেকে বলেন, স্পেনের প্রতিরোধ জাতীয়তাবাদী প্রতিরোধ নয়। স্পেনীয় কৃষক তাদের অভিজাত নেতাদের অধীনে থেকে পুরোনো ব্যবস্থাকে ধরে রাখার জন্যই নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। কারণ যাই হোক, বিদেশি বোনাপার্টের বিরুদ্ধে স্পেনীয় মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য।
ফ্রান্সে নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া: নেপোলিয়ান যতদিন ফরাসিবাসীকে যুদ্ধজয়ের গৌরব এনে দিয়েছেন, ফ্রান্স তাঁকে সমর্থন করেছে। কিন্তু পরবর্তীকালে নেপোলিয়ানের একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা, বাক্স্বাধীনতা হরণ, গুপ্তচর নিয়োগ প্রভৃতি কারণে ফরাসি জনগণের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হতে থাকে। মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার ব্যর্থতা ফ্রান্সের মানুষদের মধ্যে নেপোলিয়ান বিরোধী প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। ইংল্যান্ডের জাহাজ ফরাসি উপকূলে না আসার ফলে বিস্তীর্ণ ইউরোপের বহু অঞ্চলের মতো ফরাসি কিছু শহরেও কারখানার উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বেকারত্ব বাড়ে। এরপর আইবেরীয় উপদ্বীপের যুদ্ধে বিপর্যয়ের পর নতুন সামরিক অভিযানগুলির জন্য নেপোলিয়ানের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। ফরাসি মানুষের ওপরও করের চাপ বাড়ে। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। তা ছাড়া একসময়ে বিপ্লবী আদর্শের বাহক নেপোলিয়ান যখন তাঁর সাম্রাজ্যবাদী রাজতন্ত্রী রূপটা প্রকাশ করেন তখন জাতীয়তাবাদী, বিপ্লবী ফ্রান্স তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
৫. নেপোলিয়ান কীভাবে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখল করেন? তাঁর ক্ষমতা দখলের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর: ডাইরেক্টরির শাসনকালে ফ্রান্স অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় ক্ষেত্রে সংকটের মধ্যে পড়ে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, সার্ডিনিয়া ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। নেপোলিয়ান উক্ত শক্তিজোটের বিরুদ্ধে একজন সমরনেতা হিসেবে অভূতপূর্ব সফলতা দেখান। তিনি ইটালিকে পরাজিত করে পার্মা, মডেনা ও নেপলস এবং অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে মিলান দখল করেন। অতঃপর পোপের রাজ্য আক্রমণ করলে পোপ ষষ্ঠ পায়াস ও নেপোলিয়ানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় টলেন্টিনোর সন্ধি (১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দ)।
অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে এসময় ডাইরেক্টরির অপশাসনে ফরাসি জনগণ ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। নেপোলিয়ানের জনপ্রিয়তা এসময় ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সকলেই চাইছিল নেপোলিয়ানের মতো একজন দক্ষ শাসক দেশের শাসনভার গ্রহণ করুক। অ্যাবে সিয়েস এবং ব্যারাস নামক দুজন ডাইরেক্টরের সহায়তায় ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর এক সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নেপোলিয়ান ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটান। অতঃপর তিনি হয়ে ওঠেন সেদেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসক। তাঁর নেতৃত্বে কনসুলেট নামক নতুন শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। প্রথম তথা প্রধান কনসাল রূপে তাঁর হাতে শাসনবিভাগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্পিত হয়। ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেটের এক প্রস্তাবক্রমে তিনি গণভোটের মাধ্যমে নিজেকে ফরাসি জাতির সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন।
তাঁর ক্ষমতা দখলের গুরুত্ব:
- নেপোলিয়ানের ক্ষমতায় আসার ফলে ফ্রান্সের অরাজক পরিস্থিতির অবসান ঘটে এবং একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
- তিনি প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কোড নেপোলিয়ান প্রবর্তন।
- সামরিক ক্ষেত্রে তাঁর নেতৃত্বে ফ্রান্সের শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
- নেপোলিয়ানের যুগে ফরাসি বিপ্লবের আদর্শসমূহ ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
- তাঁর শাসনে ফ্রান্স ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রে একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
- ফ্রান্সে শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে এনে তিনি বিপ্লব-পরবর্তী বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটান।
- তাঁর শাসনামলে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার আদর্শকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করা হয় এবং একনায়কতন্ত্র ও আধুনিকতার মধ্যে এক সেতুবন্ধন গড়ে ওঠে।
- নেপোলিয়ানের সাম্রাজ্যবাদের ফলে ইউরোপে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে, যা পরবর্তীকালে একীভূত জাতি-রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
অতিরিক্ত (Extras)
বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQs)
Coming soon
প্রশ্ন ও উত্তর (Questions, Answers)
Coming soon
Get notes of other boards, classes, and subjects